অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ
তাঁদের জুটিটা ছিল বিশ্ব ক্রিকেটে চিরচর্চিত । অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও শেন ওয়ার্ন । ওয়ার্ন বল করতে এলেই উইকেটের পেছন থেকে ‘come on warnee’ বলে ওয়ার্নকে উৎসাহ দিতেন গিলি । তার বলে অসংখ্য স্ট্যাম্পও গিলক্রিস্ট করেছেন। স্লিপে দাঁড়াতেন ওয়ার্ন আর অবসর সময়ে দুজনের আলোচনা, মজা করতো একে ওপরের সঙ্গে ।
এক সাক্ষাৎকারে গিলক্রিস্ট জানান, মৃত্যুর মাত্র আট ঘণ্টা আগেই প্রিয় বন্ধু ওয়ার্ন তাঁকে মেসেজ করেছিলেন। গিলির কথায় , ‘আমি ওয়ার্নের সঙ্গে এক সপ্তাহ আগে কথা বলেছিলাম এবং ও আমায় সম্প্রতি একটা মেসেজও পাঠিয়েছিল। আমার যতদূর মনে হচ্ছে, সেটা ওর মৃত্যুর আট ঘণ্টা মতো আগে। ও আমায় লিখেছিল, চার্চ (গিলক্রিস্টের ডাকনাম), রডকে দারুণ শ্রদ্ধাজ্ঞলি দিয়েছ। আমি রডের মৃত্যুর পর একটা ভয়েস ওভার করি এবং সেটা আমার সৌভাগ্য। আমরা তখনও আমার ছোটবেলার হিরো রড মার্শের মৃত্যুই মেনে নিতে পারছিলাম না। ওয়ার্নি আমায় ওই ভয়েস ওভারের জন্যই বাহ্বা দিয়েছিল। এটাই আমার আর ওয়ার্নির শেষ কথা। এই মেসেজ আমি জীবনে ডিলিট করব না ।’ এরপর গিলি জানান,’আমার আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের জন্য লোকে আমাকে মনে রাখুক চাই না। সবকিছু ভুলে , বরং ওয়ার্নের বলে উইকেটের পিছনে কিপিং করাটাকেই লোকে মনে রাখুক। কারণ ওটাই আমার নিজের কেরিয়ারের ‘সেরা হাইলাইট’। কারণ ওয়ার্নির বলে যখন আমি কিপিং করতাম ও জীবনের সেরা বোলিংটা করত। আমি ও ইয়ান হিলি দুজনেই ওর সেরা সময়ে কিপিং করেছি। জানি ওকে কিপিং করা কতটা কঠিন ছিল। যখন স্লিপ থেকে গিয়ে টুপি খুলে আম্পায়ারকে দিত তখন থেকেই চিন্তা শুরু হয়ে যেত আমার । একজন ফিল্ম ডিরেক্টরের মত ছিল স্ক্রিপ্ট যেন ওর বোলিংয়ে সেরা জিনিসটা সবসময় লেখাই থাকত আগের থেকে। আমার কেরিয়ারের একটা বিশাল জায়গা জুড়ে আছে। যা একজন কিপার বোলার সম্পর্ক থেকেও অনেক বড় ছিল।’ গত শুক্রবার হঠাতই স্পিন কিংবদন্তি শেন ওয়ার্নের প্রয়াণে শোক বিহ্বল ক্রিকেটজগত। তাইল্যান্ডের কো সামুইয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অসি তারকা ওয়ার্নের আকস্মিক মৃত্যু হয়। ওয়ার্নের পরিবারের সদস্যদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর শেষকৃত্য করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্নের মৃত্যুতে ভিক্টোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড্যানিয়েল অ্যান্ড্রুজ শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, “ভিক্টোরিয়া একজন আইকনকে হারালো। অস্ট্রেলিয়া একজন কিংবদন্তি হারালো। স্পিনারের জাদুকরের মৃত্যুতে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব শোকাহত। শেন ওয়ার্ন ক্রিকেটের নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছে।”