ক্যাগ রিপোর্টের ছেঁড়া কাঁথায় বুলেট ট্রেন লাখ টাকার স্বপ্ন- উঠছে প্রশ্ন

এনএফবি ডেস্ক, নয়া দিল্লিঃ

খরচে স্টার মার্কস ফলাফলে ডাহা ফেল ভারতীয় রেল। ক্যাগ (Comptroller and Aditor General)- এর রিপোর্টে উঠে এলে সেই তথ্য। গত এক দশকে রেলপথের উন্নতির জন্য প্রায় ২.৫ লক্ষ কোটি টাকা খরচ হয়েছে ভারত সরকারের। রেলপথের উন্নয়ন, ট্রেনের গতিবৃদ্ধি এবং রেল পরিষেবার উন্নতিতে এই টাকা খরচ হওয়ার কথা। তা হয়েছেও। কিন্তু তাতে উন্নতির ছবি যতটা না সামনে এসেছে তার তুলনায় অবনতির পরিসংখ্যানই বেশি।
ক্যাগের পেশ করা রিপোর্ট অনুযায়ী, অনান্য দেশের তুলনায় সময়ে পৌঁছানো নিয়ে কড়াকড়ি কম হওয়া সত্ত্বেও এই মাপকাঠিতে পূর্বের থেকে গত কয়েক বছরে অনেক পিছিয়ে গিয়েছে ভারতীয় রেল। ২০১২-১৩ সালে কমবেশি ৭৯ শতাংশ ট্রেন সময় মতো গন্তব্যে পৌঁছাত। ২০১৮-১৯ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬৯.২৩ শতাংশে। অর্থাৎ ৬ বছরে ভারতীয় রেলের সময়ানুবর্তিতা কমেছে ১০ শতাংশ। উল্লেখ্য, নির্দিষ্ট সময়ের ১৫ পর পর্যন্ত ট্রেন স্টেশনে পৌঁছালেও সেটিকে ভারতে ‘লেট’ বলে গণ্য করা হয় না। পাশাপাশি শেষ স্টেশনে পৌঁছানোর হিসাবে এই রিপোর্ট, মধ্যবর্তী স্টেশনের হিসাব ধরলে তার ফলাফল আরও করুণ হত বলেই অনুমান।

২০০৮ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত রেল লাইনের আধুনিকীকরণ এবং রক্ষনাবেক্ষণে বিপুল খরচ হয়। ২০১৬-১৭ সালে ‘মিশন রফতার’ নামে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এই প্রকল্পে যে লক্ষ্য নেওয়া হয়, তা পুরোপুরি ব্যর্থ। ব্যস্ত রুটেও যাতে ট্রেন দ্রুত গতিতে ছুটতে পারে, তার লক্ষ্যে এই ‘মিশন রফতার’ শুরু হয়েছিল। কিন্তু এই মিশনের কারণে ট্রেনের গতিতে বিশেষ হেরফের হয়নি। ২০২১-২২ সালের মধ্যে এই সব রুটে এক্সপ্রেস ট্রেন ৭৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে দৌড়োনোর কথা ছিল। কিন্তু তেমন উল্লেখযোগ্যভাবে ট্রেনের গতি বাড়েনি। ৪৭৮টি সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের মধ্যে ১২৩টিই ঘন্টায় ৫৫ কিলোমিটার গতির লক্ষ্য মাত্রা থেকে ধীর গতিতে চলছে। ক্যাগের রিপোর্ট অনুযায়ী, যে যে ফ্যাক্টরের জন্য রেল এভাবে গতিহীন হচ্ছে তার মধ্যে অন্তত ছ’টিই নিয়ন্ত্রণযোগ্য। তবে মালগাড়ির ক্ষেত্রে এই অবস্থা আরও খারাপ। কারণ এত টাকা খরচ করে মালগাড়ির গতি আগের চেয়ে কমে গিয়েছে। গত এক দশকে তা কমেছে ৯.৭২ শতাংশ।
ক্যাগের এই রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে দেশে বুলেট ট্রেন বা সুপার ফাস্ট ট্রেন চালানোর চেষ্টা ‘ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা’ হয়ে যাবে না তো- প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট মহলের।