জেলা

দিঘা ইলিশে ভাটা, হতাশ মৎস্যজীবীরা

এনএফবি,পূর্ব মেদিনীপুরঃ

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দিঘার সমুদ্রে ইলিশে ভাটা, হতাশ মৎস্যজীবীরা। ভরা মরশুমে ইলিশ শিকারে বেরিয়েছে মৎস্যজীবীদের ট্রলার। কিন্তু সমুদ্রে দেখা নেই ইলিশের। ফলে খালি হাতে ফিরে আসতে হচ্ছে মৎস্যজীবীদের। মরশুমের প্রথম দিকে ইলিশ যোগানে ভাটা পড়ায় আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মৎস্যজীবী ও ট্রলার লঞ্চ মালিকেরা। পরপর প্রতি বছর দিঘায় ইলিশের যোগান কমছে। এবছর ইলিশের যোগান প্রায় নেই বললেই চলে। মরশুমের প্রথম দিকে গত বছরের তুলনায় দিঘায় ইলিশ উঠেছে অনেক কম। আবার তুলনামূলক অনেক ছোট। বাজারে ইলিশের চাহিদা থাকলেও। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মৎস্যজীবীদের ট্রলারে ইলিশ না ওঠায় দিঘা মোহনা মৎস্য নিলাম কেন্দ্রে প্রতিদিনই আসছে ওড়িশার ইলিশ। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নদনদী খাল বিল ও সমুদ্র দ্বারা পরিবেষ্টিত। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রায় ৬৫ কিলোমিটার বিস্তৃত উপকূল। নদ নদী সমুদ্র থাকার কারণে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সারা বছর সামুদ্রিক মাছের যোগান মেলে। মাছ ধরা থেকে মাছ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত জেলার বহু মানুষ। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রায় দু’হাজার মৎস্যজীবীর ট্রলার লঞ্চ ও নৌকা, ইলিশ শিকারের উদ্দেশ্যে সমুদ্রে জাল ফেলেছে। কিন্তু ধরা পড়ছে না সেভাবে ইলিশ। আর তাতেই হতাশ ট্রলার মালিক থেকে মৎস্যজীবীরা।

পরিতোষ রায়, আড়ৎদার। নিজস্ব চিত্র

মরশুমের শুরুতে জালে কিছু ইলিশ উঠলেও সময় যতই এগিয়েছে ততই আশাভঙ্গ হয়েছেন মৎসজীবীরা। জালে পর্যাপ্ত ইলিশ না ওঠায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে মৎস্যজীবী থেকে শুরু করে ট্রলার মালিকদের। মরশুমের শুরুতে ইলিশ পাওয়ার আশায় বুক বেঁধে ছিলেন মৎসজীবিরা। ইলিশ বেশি ধরা পড়লে আগামী কয়েক মাস আর্থিক লাভের মুখ দেখতে পেতেন। প্রাকৃতিক কারণ ও সেই সঙ্গে বেড়েছে ট্রলারের খরচ। দাম বেড়েছে ট্রলারের জ্বালানীর। কিন্তু ইলিশ না ওঠায় ক্ষতির আশঙ্কা করছে ট্রলার মালিক থেকে মৎস্যজীবীরা। দিঘা মোহনার এক ট্রলার মালিক বলেন, ‘সারা বছর ইলিশের আশায় বসে থাকি। দিন দিন সমুদ্রের ট্রলার পাঠানোর খরচ বাড়ছে। ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। খরচ উঠে আসবে না। যদিও মৎস্যজীবীরা আশা করছে আবহাওয়া অনুকূল হলেই জালে ইলিশ উঠে আসবে। মৎস্যজীবীদের কথায়, ‘পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে, গভীর সমুদ্রে ইলিশের ঝাঁক দেখা যাবে না। নেই তেমন পুবের বাতাসও।’

য়দেব জানা, ট্রলার মালিক। নিজস্ব চিত্র

ক্যালেন্ডারে ভরা বর্ষার মাস থাকলেও, দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি। নিম্নচাপের ঝিরঝিরে বৃষ্টি ও হাওয়ায় ইলিশের ঝাঁক জালে ধরা পড়ে। বৃষ্টি না হওয়ায় এখন সে ভাবে দেখা মেলেনি রুপোলি শষ্যের। যদিও আগামী কয়েক দিনে পরিস্থিতি বদল হলে ফের সুসময় আসবে বলে মনে করেছেন ট্রলার মালিক থেকে মৎস্যজীবীরা। তবে দিঘায় যে প্রতি বছর ইলিশের যোগান কমছে। এ বিষয়ে দীঘা মোহনা ফেস ট্রেডার্স ও ফিশারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস জানান, গত বছর মরশুমের প্রথমে প্রায় ১০ টন ইলিশ মাছ পাওয়া গিয়েছিল। এবছর তার পরিমাণ নেমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২ টনের কাছাকাছি।’ বাজারে ইলিশের টান থাকলেও আবহাওয়ার বদল কবে হবে সেই আশায় বুক বাঁধছে মৎস্যজীবী ও ট্রলার মালিকেরা।

নবকুমার পয়রা, ডিরেক্টর দিঘা ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিশ ট্রের্ডাস অ্যাসোসিয়েশন। নিজস্ব চিত্র