অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ
ফিফা রাঙ্কিং সেই কথা বলছে না। তবে গত চার বছরে ভারতীয় ফুটবল দল অনেক এগিয়েছে বলে মনে করেন ভারতের জাতীয় গোলকিপার গুরপ্রীত সিং সান্ধু। সেই কারণেই এ বছরেও টানা দ্বিতীয় বার এশিয়ান কাপের মূলপর্বে তাদের ওঠার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন অভিজ্ঞ এই গোলকিপার, যিনি গতবারও এশিয়ান কাপ মূলপর্বে ভারতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন।
এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে গ্রুপ ডি-র খেলাগুলি আগামী সপ্তাহে হবে কলকাতায়। এই গ্রুপে ভারত ছাড়াও রয়েছে হংকং, আফগানিস্তান ও কম্বোডিয়া। এরা প্রত্যেকেই ফিফা ক্রমতালিকায় ভারতের নিচে রয়েছে। চলতি মাসের ৮, ১১ ও ১৪ তারিখে এই ম্যাচগুলি হবে। তার আগে প্রস্তুতির শেষ পর্ব চলছে ভারতীয় দলের।
তিন বছর আগে দীর্ঘ আট বছর পরে এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলেছিল ভারত। ২০১৯-এ সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে অল্পের জন্য নকআউট পর্বে পৌঁছতে না পারা ভারত কখনও টানা দু’বার এই টুর্নামেন্টের মূলপর্বে যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। এ বার সেই প্রথা ভেঙে তারা ফের মূলপর্বে উঠতে পারবে কি না, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে দেশের ফুটবলপ্রেমী জনতা। অনেকে আশাবাদীও।
সেই দলেরও সদস্য থাকা গুরপ্রীত সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “যদি মূলপর্বে ওঠা আমাদের উন্নতির প্রতিফলন হয়, তা হলে বলতেই হবে, সেই উন্নতি আমরা করেছি, তার প্রমাণও আমরা দিয়েছি। প্রতি চার বছর অন্তর এই জায়গায় আমি থাকতে চাই। এশিয়ান কাপে ভাল কিছু করতে পারা মানে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বেও আমরা হয়তো ভাল কিছু করে দেখাব”।
গতবারের অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়ে গুরপ্রীত বলেন, “সে বার (২০১৯) এতটাই কাছাকাছি গিয়েছিলাম আমরা যে মনে হয়েছিল বিশ্বকাপ বাছাই পর্বেও ভাল কিছু করতে পারি। টুর্নামেন্টটা খুবই পেশাদারি দক্ষতায় আয়োজন করা হয়। তাই ওখানকার অভিজ্ঞতা খুব ভাল ছিল। থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪-১ জয়টাও স্মৃতিতে থাকবে আমার। আশা করি এ বারেও তেমনই ভাল খেলতে পারব”।
তবে এ বারের অভিযান মোটেই সহজ হবে না বলে মনে করেন সান্ধু। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আধুনিক ফুটবলে সব ম্যাচই কঠিন। প্রতিপক্ষদের প্রতি সম্মান বজায় রাখতে হবে আমাদের। এই তিন ম্যাচের জন্য ওরাও ভাল প্রস্তুতি নিয়েছে। তা ছাড়া আমাদের মতো ওরাও ভাল হোমওয়ার্ক করে এসেছে বলেই ধরে নিতে হবে। এই স্তরে কাউকেই কম গুরুত্ব দেওয়ার ভুল করা যায় না”।
তবে নিজেদের গা থেকে ফেভারিটের তকমা ঝেড়ে ফেলতে রাজি নন তিনি। বলেন, “আমরা যেমন বিপক্ষকে সম্মান করব, তেমনই তাদের প্রতি নির্দয়ও হতে হবে আমাদের। আমাদের মাঠে নেমে ম্যাচের ফল নিজেদের পক্ষে আনতে হবে। তা করতে পারলে এই গ্রুপ থেকে আমাদেরই মূলপর্বে যাওয়া উচিত”।
এই তিন ম্যাচে ভারতীয় ফরোয়ার্ডদের দিকে যেমন নজর থাকবে সবার, তেমনই সান্ধুর ওপরও নজর থাকবে সমান ভাবে। কারণ ভারতকে জিততে গেলে গোল খেলে চলবে না। এবং গোল না খাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকাই হতে চলেছে অপরিহার্য্য।
এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বে ছ’টি গ্রুপের জয়ীরা যেমন মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে, তেমনই দ্বিতীয় স্থানাধিকারী দলগুলির মধ্যে থেকে সেরা পাঁচটি দলকে মূলপর্বে খেলার ছাড়পত্র দেওয়া হবে।