জেলাফিচার

ঝাড়গ্রামে মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার উদ্ধারের ঘটনায় জাম্বনি থানায় হোমগার্ড সহ – ধৃত ৬

এনএফবি,ঝাড়গ্রামঃ

চলতি বছরের শুরু থেকেই মাও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল জঙ্গলমহল জুড়ে। প্রতিদিন সকাল হলেই উদ্ধার হচ্ছিল মাও নামাঙ্কিত পোস্টার । মাওবাদীদের ডাকা বনধও সফল হতে দেখে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল জেলা পুলিশ প্রশাসনের । বিষয়টির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করে জেলা পুলিশ । তদন্তে নেমে ছয় জন ভুয়ো মাওবাদীকে গ্রেফতার করে পুলিশ ।

শনিবার ঝাড়গ্রাম পুলিশ সুপারের অফিসে সাংবাদিক সম্মেলন করেন পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা । এই দিন তিনি বলেন , “বিগত কয়েক মাস থেকে মার্চ ,এপ্রিল, মে মাসে এই এলাকায় মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার উদ্ধার হয়। বিনপুর থানার অন্তর্গত মালাবতি থেকে ৪ঠা এপ্রিল এবং ভান্ডারু , মোহনপুর ,লালডাঙ্গা এবং হাডদা এবং বাঁকুড়ার বর্ডারের বক্সী এলাকায় মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার উদ্ধার হয় । প্রথম থেকে আমাদের পুলিশের দাবি ছিল এই এলাকায় কোন মাওবাদী স্কোয়াড নেই । মে মাসে তদন্তের মাধ্যমে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয় । পরে আরও দুজনকে সাঁকরাইল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় । জুন মাসের শেষের দিকে মাওবাদীদের নাম করে পোস্টারের মাধ্যমে কিছু ডিমান্ড করা হয় । ওই পোস্টারে মাওবাদী লেখা ছিল না কিন্তু মাওবাদীদের অন্য একটি সংগঠনের নাম লেখা ছিল । আমরা এটার উপরেও তদন্ত শুরু করি, কিন্তু আমাদের প্রথম থেকে ধারণা ছিল যে এটা কোন মাওবাদী স্কোয়ার্ড এর কাজ নয় কিছু স্বার্থান্বেষী বা লোভী মানুষ এই কাজগুলি করছে । তদন্তের মাধ্যমে আমরা গতকাল ছয়জনকে গ্রেফতার করেছি। এর মধ্যে ৫ জন সরাসরি মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার এর সঙ্গে যুক্ত । ৮ই এপ্রিল যে মাওবাদী বনধ ডাকা হয়েছিল । যারা গ্রেফতার হয়েছে তারাই ডেকেছিল তদন্তের মাধ্যমে তারা স্বীকার করেছে । তারা চেয়েছিল মাওবাদী নাম করে জঙ্গলমহলে আতঙ্ক সৃষ্টি করে তাদের স্বার্থসিদ্ধি করা । এতে আরও বেশ কিছুজনের নাম রয়েছে তাদের এখনো ধরা হয়নি তাদের সন্ধান চলছে । যাদের অ্যারেস্ট করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে বাহাদুর মান্ডি নামে জাম্বনি থানার একটি হোমগার্ড , বিনপুর থানার অন্তর্গত শাহাড়ি থেকে শংকর মন্ডল , কাকো থেকে মহেন্দ্র হাঁসদা ও ইলিয়াস থোফা, ভাণ্ডারু থেকে বাবলু দোলে এবং শীলদা থেকে এলিয়াস লুলু । এরা ছাড়াও আরও একজন রয়েছে যাকে আমরা খুব শীঘ্রই গ্রেফতার করবো। এই চক্রটি কাজ হচ্ছে লাল কালিতে মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার লিখে আতঙ্ক ছড়ানো । যার ফলে সহজেই যা ডিমান্ড করত সেই ডিমান্ড পূরণ করতে পারত । বিভিন্ন জায়গায় টাকার ডিমান্ড করেছিল কোন জায়গায় টাকা নিতে পারেনি আমাদের অপারেশনের মাধ্যমে এক জায়গায় টাকা সমেত আমরা ধরেছি । অপারেশনের মাধ্যমে বেশকিছু লাল কালিতে লেখা মাও নামাঙ্কিত পোস্টার, একটি দেশি বন্দুক এবং ৩৫ হাজার টাকা, একটি মোবাইল ফোন যেটার মাধ্যমে তারা সিম কার্ড পরিবর্তন করে ফোন করতো এই গুলি উদ্ধার হয়ছে । আমাদের তদন্ত আরো চলবে । এরা যারা গ্রেপ্তার হয়েছে, এদের মাধ্যমেই যারা বাকি আছে তাদেরকেও গ্রেপ্তার করা হবে ৷”