NFB Digital Desk:
প্রয়োজনীয় উপকরণ
কোলকাতা স্টাইলে মটন বিরিয়ানি রান্না করতে গেলে কিছু মৌলিক এবং অতীব প্রয়োজনীয় উপকরণ লাগবে যা এই বিশেষ ধরনের বিরিয়ানির স্বাদ ও গন্ধকে পরিপূর্ণ করে তোলে। প্রধান উপকরণগুলির মধ্যে রয়েছে:
- মটন: ১ কেজি, ভাল করে ধোয়া ও পরিষ্কার করা। কোলকাতা স্টাইলে মটন বিরিয়ানি বলতে মটন অবশ্যই দরকার।
- বাসমতি চাল: ৫০০ গ্রাম, ভালো মানের ব্যবহার করতে হবে যাতে সুগন্ধ বজায় থাকে।
- আলু: ৩-৪টি মাঝারি আকারের, খোসা ছাড়িয়ে আধা সিদ্ধ করে তেলে ভেজে নেওয়া।
- পেঁয়াজ: ৩ টি বড় আকারের, পাতলা কুচি করে ভাজা।
- টক দই: ১ কাপ, মটন সেদ্ধ করার জন্য এটি ব্যবহৃত হবে যা বিরিয়ানিতে মশলার সাথে মিশ্রিত হয়ে এক অনন্য স্বাদ প্রদান করে।
- ঘি: ৪ টেবিল চামচ, মটন ও ব্যাসমতি চালের স্বাদ উন্নত করার জন্য ব্যবহৃত হবে।
- কেওড়া জল: ১ টেবিল চামচ, এটি বিরিয়ানির সুগন্ধ বাড়ানোর জন্য প্রয়োজন।
- গুলাব জল: ১ টেবিল চামচ, এটি বিরিয়ানিতে দারুন সুগন্ধ যোগ করবে।
- বিরিয়ানি মশলা: ২ টেবিল চামচ, বাজারে সহজে পাওয়া যায় কিংবা নিজেই বানানো যায়।
এছাড়াও ছোট ছোট মশলা ও অন্যান্য উপকরণ যেমন:
- জিরা: ১ চা চামচ
- ধনে গুঁড়ো: ১ চা চামচ
- লবঙ্গ: ৪-৫টি
- দারুচিনি: ২-৩টি ছোট টুকরা
- এলাচ: ৩-৪টি
- জয়ফল ও জয়ত্রী: ১ চা চামচ
- লবণ: সাদ অনুযায়ী
- তেল: পেঁয়াজ ভাজার জন্য
এই সমস্ত উপকরণগুলি একসঙ্গে মিলিয়ে যে মিশ্রণ তৈরি হবে, তা হল কোলকাতা স্টাইলে মটন বিরিয়ানির প্রাণ। উপকরণগুলি সঠিক মাপে এবং পদ্ধতিমতো ব্যবহার করলে বিরিয়ানির প্রকৃত স্বাদ এবং সুবাস পাওয়া সম্ভব।
মটন মেরিনেশনের পদ্ধতি
কলকাতা স্টাইলে মটন বিরিয়ানি তৈরির ক্ষেত্রে মটনের সঠিক মেরিনেশন অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ। মটনকে মেরিনেট করতে প্রথমেই প্রয়োজন কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকরণের। এসব উপকরণের মধ্যে রয়েছে টক দই, আদা-রসুন বাটা, লবণ, হলুদ গুঁড়া, এবং মশলার মিশ্রণ। সঠিকভাবে মেরিনেশন করার জন্য প্রথমে মটনগুলি ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন এবং পরে এগুলোকে একটি বড় পাত্রে রাখুন।
পাত্রে রাখা মটনের ওপর টক দই যোগ করুন যা মাংসকে নরম এবং রসালো করবে। এরপর যোগ করুন আদা-রসুন বাটা যা বিরিয়ানির স্বাদ বাড়াবে। মেরিনেশনের বেশির ভাগ স্বাদ আদা-রসুনের উপর নির্ভর করে, তাই এগুলো যেন ভালো মানের হয় সেটাও দেখতে হবে। লবণ অল্প করে ছিটিয়ে দিন, এতে মাংস ঠিকমতো মেরিনেট হবে।
হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে দিন, যা মেটনকে একটি সুন্দর রং দেবে এবং পাশাপাশি এর গুণমানও বৃদ্ধি করবে। এরপর মশলার মিশ্রণ যোগ করুন; এর মধ্যে থাকতে পারে ধনে গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, লঙ্কা গুঁড়া, এবং গরম মশলা। সব উপকরণ মিশে গেলে মটনগুলি ভালোভাবে মিশ্রিত করে নিন যাতে সব জায়গায় মসলা সঠিকভাবে লাগে।
মটন মেরিনেশন সম্পন্ন হলেই মটনকে ২-৩ ঘণ্টা পাত্রে ঢাকা দিয়ে রেখে দিন। মেরিনেশনের সময় মাংস মশলার সাথে ভালোভাবে মিশবে এবং মাংসের মধ্যে গিয়ে প্রচুর স্বাদ তৈরি করবে। এক্ষেত্রে মটনের ঠিকমতো ময়েশ্চার ধরে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঘরে তৈরি এই মটন মেরিনেশন প্রক্রিয়াটি মটন বিরিয়ানি তৈরির ক্ষেত্রে আপনাকে কর্মকর্ত উপাদান এবং স্বাদ নিশ্চিত করবে।
চাল রান্নার জন্য প্রস্তুতি
মটন বিরিয়ানি সঠিকভাবে প্রস্তুত করতে চালের প্রস্তুতি বিশেষ গুরুত্বের। প্রথম ধাপ হিসাবে, ভালো মানের বাসমতি চাল নির্বাচন করা আবশ্যক। চালকে একাধিকবার ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে নিতে হবে যতক্ষণ না তা পরিষ্কার হয় এবং অবশেষে পরিষ্কার পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। অন্তত ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখার পরই চালের রান্না শুরু করা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর ফলে চালের দানা আলাদা এবং ঝরঝরে হবে।
ভিজানোর পর, চালকে আধা সেদ্ধ করতে হবে। এজন্য একটি বড় পাত্রে পর্যাপ্ত পানি গরম করে তাতে নুন এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস যোগ করা যাক। লেবুর রস যোগ করলে চালের রং একটি সুন্দর সোনালী ঝলক পায়, এবং নুন চালের স্বাদ উন্নত করে। পানি ফুটে উঠলে চাল ঢেলে দিতে হবে।
চাল তখন পর্যন্ত সিদ্ধ করতে হবে যতক্ষণ না তা আধাপাকা অবস্থায় চলে আসে, অর্থাৎ কতকটা নরম কিন্তু পুরোপুরি না। এই স্তরে চালকে ছাঁকে নিয়ে ঠাণ্ডা পানির নিছে এক প্রস্থ ধুয়ে নিয়েই শুদ্ধ করতে হয়।
এই পর্যায়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যাতে বিরিয়ানির চূড়ান্ত পর্যায়ে চাল অতিরিক্ত নরম হয়ে না যায় বা আটাকে না পড়ে। একবার চাল হয়ে গেলে, আঁটকানো পানি ফেলে দিয়ে চালকে সরিয়ে রেখে ঠাণ্ডা করে নিতে হবে। এইভাবে প্রস্তুত করা আধাসেদ্ধ চাল হল কোলকাতা স্টাইলে মটন বিরিয়ানি তৈরির মূল উপাদান। চালের সঠিক প্রস্তুতিই আপনার বিরিয়ানির স্বাদকে আরো উৎকৃষ্ট করে তুলবে।
আলু এবং পেঁয়াজ প্রস্তুতি
কোলকাতা স্টাইলে মটন বিরিয়ানির গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের মধ্যে আলু এবং পেঁয়াজের গুরুত্ব অপার। প্রথমত, আলুগুলি সতর্কতার সাথে বেছে নিন, মাঝারি আকারের এবং মসৃণ ত্বকের হওয়া ভালো। আলুগুলো সতেজ হলে রন্ধনে আরও স্বাদ আসবে। আলুগুলো খোসা ছাড়িয়ে আট ভাগে কেটে নিন, এরপর হালকা লবণ এবং হলুদ মিশিয়ে মাথায় রেখে দিন। এবার একটি ফ্রাইং প্যানে যথেষ্ট পরিমাণ তেল গরম করে আলুগুলো সুবর্ণাভ লালচে হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া হতে পারে তবে ধৈর্য ধরে করতে হবে, যেন আলুগুলো ভালভাবে ভাজা হয়।
এখন পেঁয়াজের পালা। কোলকাতা স্টাইলে মটন বিরিয়ানির জন্য ঘন ও কুঁচি করা পেঁয়াজের প্রয়োজন হয়। প্রথমে পেঁয়াজগুলোকে ভালো ভাবে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে পাতলা কুঁচি করে নিন। এরপর শুকনো ও পরিষ্কার প্যানে সামান্য তেল দিয়ে পেঁয়াজগুলো ভাজুন। পেঁয়াজগুলো স্বর্ণাভ ও কুঁচকানো হয়ে আসা পর্যন্ত ভাজতে থাকে। এরফলে পেঁয়াজগুলোর থেকে এক প্রকার মিষ্টি স্বাদ বের হয়ে আসে যা বিরিয়ানির বিশেষ সৌন্দর্য এনে দেয়। একে বাগার পেঁয়াজ বলে। এই ভাজা পেঁয়াজগুলো বিরিয়ানিতে ব্যবহৃত হবে এবং এটি মুখরোচক স্বাদ যোগ করবে।
এভাবে, আলু এবং পেঁয়াজ প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে আপনি মটন বিরিয়ানি তৈরির পরবর্তী ধাপগুলির জন্য প্রস্তুত হবেন। খেয়াল রাখবেন, প্রতিটি ধাপেই প্রয়োজনীয় উপকরণ ও প্রণালী সঠিকভাবে পালন করে তবেই আপনার বিরিয়ানি হবে স্বাদে ও ঘ্রাণে পরিপূর্ণ।
মটন রান্নার পদ্ধতি
মটন বিরিয়ানি তৈরির প্রক্রিয়ায় মটন মাংসকে সঠিকভাবে রান্না করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মটনকে মিষ্টি দই, আদা-রসুন বাটা, লবণ, লেবুর রস, কাঁচা পাপড়ি গুঁড়ো, এবং অন্যান্য মসলা মিশিয়ে কমপক্ষে ৩-৪ ঘণ্টা মেরিনেট করতে হবে। এভাবে মেরিনেট করা মিষ্টি এবং তন্দুর দুই প্রভাবায় কাজ করবে।
প্রথমে একটি বড় কড়াইতে সাদা তেল গরম করে কালো এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ, এবং জিরা ফোড়ণ দিয়ে দিন। এতে একখণ্ড কাঁচা মরিচের দানা দিয়ে কয়েক সেকেন্ড নেড়ে নিন। এরপর মশলা মিশ্রিত মেরিনেট করা মটন যোগ করুন এবং ভালোভাবে নেড়ে নিন। মাংসকে মাঝারি আঁচে কষাতে থাকুন যতক্ষণ না তেল মাখামাখি হয়ে যায় এবং মাংসের রঙ পরিবর্তন না হয়।
এবার মিশ্রণটা মিশিয়ে একটু পানি যোগ করে মাংসকে ঢেকে দিতে হবে। মাংসকে প্রায় ৩০-৪৫ মিনিট কম আঁচে রান্না করতে হবে। রান্নার সময় মাঝে মাঝে মাখাটি নেড়েচেড়ে নিতে হবে যেন মটন নিচে না ধরে যায়। মটন সেদ্ধ হওয়া অবধি দেখুন যে মাংস তার নিজের থেকে আলাদা হয়ে আসছে। মটনের নরম এবং স্ফ্রুতি অবস্থায় পৌঁছানো নিশ্চয় করতে হবে, নাহলে বিরিয়ানির মূল স্বাদ পাবে না।
কিছুক্ষণ পর চুলাটি বন্ধ করে মটনের স্বাদ এবং সিজনিং চেক করুন, প্রয়োজন মনে করলে আরও কিছু লবণ বা মসলা যোগ করুন। এই মুহূর্তেই সাধারণত মটনের রেডি হয়ে যাবে, যা মূল বিরিয়ানির পুরো প্রক্রিয়ায় গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে।
দমের জন্য প্রস্তুতি
কোলকাতা স্টাইলে মটন বিরিয়ানি তৈরি করতে প্রথমেই প্রধান দুটি উপাদান, মটন এবং চাল, সঠিকভাবে প্রস্তুত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মটনটি ভালোমতো কেটে সঠিকভাবে ধুয়ে নিয়ে, কমপক্ষে ১ ঘণ্টা মেরিনেট করতে হবে। মেরিনেশনে ব্যবহার করা যায় দই, আদা-রসুন বাটা, এবং কিছু মশলা যেমন লবঙ্গ, এলাচ ইত্যাদি। একইভাবে, বাসমতী চালটি কয়েকবার জল দিয়ে ধুয়ে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে এবং এরপর সেটি আলাদা করে সেদ্ধ করতে হবে। চালের সেদ্ধটা আধা সিদ্ধ হতে হবে যাতে দমে রান্না করা যায়।
এখন মটন এবং চাল প্রস্তুত করার পাশাপাশি, দমের জন্য পাত্রটি প্রস্তুত করতে হবে। বিরিয়ানির জন্য সাধারণত একটি ভারী তলার পাত্র বা হাঁড়ি ব্যবহার করা হয়। পাত্রটির তেল বা ঘি দিয়ে অল্প পরিমাণে মাখিয়ে নিতে হবে। এর পরের ধাপে, মটন এবং চালের স্তরবিন্যাস করে সাজানো হবে। প্রথমেই পাত্রে মটনের একটি স্তর দিতে হবে। এরপর সেদ্ধ করা চালের একটি স্তর দেওয়া হবে। অতঃপর এর উপর পরিমাণমতো লবণ, বেরেস্তা (ভাজা পেঁয়াজ), কাঁচা লংকা, এবং মসলাগুলো ছিটিয়ে দিতে হবে।
তার পরের ধাপে, দমে রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় তরল দিতে হবে। তরল হিসেবে ব্যবহার করা যায় মটনের স্টক বা গরম জল। উপর থেকে একটুখানি কেশর-মিশানো দুধ, গোলাপ জল, এবং সামান্য ঘি ছিটিয়ে দেওয়া যায়। সমস্ত স্তর দেওয়া হয়ে গেলে পাত্রটি ভালোভাবে ঢাকনা লাগিয়ে ঢাকনাটি আটকে দেওয়া উচিত যাতে ভাপ বাইরে বেরিয়ে না যেতে পারে। ঢাকনাটি আটকে দেওয়ার জন্য ময়দা দিয়ে সিল করে দিতে পারেন। এরপর পাত্রটিকে নীচু আঁচে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রেখে দিতে হবে যাতে মটন এবং চাল একসঙ্গে সম্পূর্ণ রূপে সেদ্ধ হয় এবং সমস্ত মশলা ও সুগন্ধ মিশে যায়।
দমে রাখার সময় এবং পদ্ধতি
কলকাতা স্টাইলে মটন বিরিয়ানি তৈরির একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো এটি চুলায় ধীর আগুনে দমে রাখা। এই পদ্ধতিতে মাংস ও চালের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে মশলার স্বাদ প্রবেশ করে, যা বিরিয়ানিটিকে প্রকৃত স্বাদ দেয়। প্রথমত, ফুটানো চাল ও মটি মিশ্রণের তৈরি হওয়ার পর, এটি দমে রাখতে ব্যবহার করা হয় ঠিকঠাক ঢাকনা ও একটি ভারী কিছু। যেমন তরকারির হাঁড়ি অথবা চাপকলের ঢাকনা এই কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে।
এরপর চুলার তাপমাত্রা কমিয়ে লো ফ্লেমে রাখতে হবে। লো ফ্লেমে রান্নার সময় সাধারণত ৪০-৪৫ মিনিট লাগে, তবে এটি মটনের মানের উপরও নির্ভর করে। পাত্রের তলায় যাতে সরু না ধরা দেয়, এজন্য মাঝে মাঝে চুলোর পাত্রটি হালকাভাবে নয়ন উঁচু করা হতে পারে।
চুলার তাপমাত্রার পাশাপাশি, পুর্নবিরিয়ানির উপাদানগুলির সঠিক সময়ে মিশ্রণ করাও গুরুত্বপূর্ণ। ২০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে হালকা নেড়েচেড়ে দেখুন এবং প্রয়োজন না হলে ফের ঢাকনা লাগিয়ে দিন। মশলার সংমিশ্রণে যোগ করা যেমন এলাচ, দারুচিনি, জয়ফল এবং জায়ত্রি, এইগুলো যথাযথ সময়েই মিশ্রণ করা উচিত।
যখন চুলায় মটন বিরিয়ানি দমে রাখা হয়, এই স্বাদ পেতে প্রায় ৪০ মিনিট পর খাবার গ্রহণ করা উচিত। তাপ বাড়ানোর সময় মাথায় রাখতে হবে যে, উত্তাপ যেন অতিরিক্ত না হয়, কারণ এতে মাংসটা কড়া হতে পারে ও বিরিয়ানির দক্ষিনে স্বাদ নষ্ট হতে পারে।
পরিবেশন এবং উপভোগের পদ্ধতি
কোলকাতা স্টাইলের মটন বিরিয়ানি খুব যত্ন সহকারে পরিবেশন করা উচিত। এটি একটি সমৃদ্ধ ও মশলাদার ডিশ হওয়ায়, বিরিয়ানির স্বাদ আরও নির্ভেজাল করা যায় সঠিক পরিবেশনার মাধ্যমে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে সাধারণ কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো ধনেপাতা। পরিবেশনের আগে মটন বিরিয়ানির উপর ধনেপাতা ছিটিয়ে দিলে এটা শুধু এর সুগন্ধই বাড়াবে না, বরং সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পাবে।
বিরিয়ানির সাথে সাইডডিশ হিসেবে বেস্ট হয় রায়তা, সালাদ এবং বিশেষ করে ভুতজল। রায়তা তৈরি করা খুব সহজ। দইয়ের সাথে কাটা পেঁয়াজ, টমেটো এবং ধনেপাতা মেশালে হালকা ও স্বাদের রায়তা তৈরি হবে, যা মোটা মশলাদার মটন বিরিয়ানির সাথে মিলিয়ে দেহকে ঠান্ডা রাখবে। এছাড়া, পেঁপে, টমেটো এবং কাকুড়ি দিয়ে মিশ্রিত সালাদ ও পরিবেশন করা যেতে পারে, যা বিরিয়ানির ভারসাম্য বজায় রাখবে । ভুতজল, যাকে লোকমুখে বুঝেছেন, এটি সাধারণত মশলা জল হিসাবে পরিচিত এবং অনেকেই এই মসলার জলটি পছন্দ করেন। এটি কাঁচা মরিচ, ধনেপাতা, পুদিনা পাতা ও লেবু দিয়ে তৈরি যা বিরিয়ানি খাবারের সময় সেটি হালকা মশালাদার অনুভব করায়।
বিরিয়ানির সবচেয়ে ভাল পরিবেশন পদ্ধতি হলো হাতের কাঁচা ঐতিহ্যবাহী স্টাইলে। বিরিয়ানির সুগন্ধ ও স্বাদ ভালোভাবে উপভোগ করতে এটি সাহায্য করে। যাই হোক, অসম্ভব লোভনীয় এই খাবারটি উপভোগের সময় খাদ্যগুণ এবং পরিমাণের প্রতি লক্ষ্য রেখে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে এটি অতিরিক্ত না হয়ে যায়।
বিশেষ কোনও উপলক্ষ থাকলে, অভিজাত পরিবেশনা তখনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। রুপালি থালা-বাটি বা সোনালি রঙের ভাযায় মটন বিরিয়ানি পরিবেশন করলে জমকালো উপলক্ষ রঙিন হয়ে ওঠে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, যে কোনো ভাবে খাবারটি উপভোগ করা প্রয়োজন; কারণ, এই ডিশের মূল আকর্ষণ হলো এর অনন্য স্বাদ এবং মশলার মেলবন্ধন।