এনএফবি, নিউজ ডেস্কঃ
টিকাকরণে পুরুষদের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে মহিলারা। তথ্য অনুযায়ী, মুম্বইয়, দিল্লি-সহ দেশের বেশিরভাগ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে লক্ষ্য করা গেছে কোভিড ভ্যাকসিনে নেওয়ায় অনেক পিছনে নারীরা। তবে এই বৈষম্য ব্যাপকভাবে প্রকট হয়েছে যোগী রাজ্যে। ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী উত্তরপ্রদেশে মোট টিকাদানের ১২.১৮ কোটি ডোজ টিকা পেয়েছেন পুরুষরা সেখানে মহিলারা পেয়েছেন মাত্র ১১.৪১ কোটি ডোজ। অপরদিকে মুম্বইয়ে প্রতি ১ হাজার জন পুরুষের অনুপাতে টিকা পেয়েছেন মাত্র ৬৯৪ জন নারী, দিল্লিতে ৭৪২।
৩৬টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে মহিলাদের করোনা প্রতিষেধক নেওয়ার সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি মাত্র নয়টি রাজ্যে। এরমধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধপ্রদেশ, বিহার, অসম, ছত্তিশগড়, কেরলা, ওড়িশা, পদুচেরি এবং তামিলনাড়ু।
আরও পড়ুনঃ রসিকবিলে ১৯ দেবতার পুজো ঘিরে উৎসব
দেশে করোনা টিকাকরণ নিয়ে এই অসামঞ্জস্যের সঠিক কারণ চিহ্নিত করা না গেলেও অনেকেই মনে করেন, যেহেতু পুরুষদের থেকে মহিলারা বাইরে বেশি বের হন তাই তাদের মধ্যে টিকাকরণের সংখ্যা বেশি। গ্লোবাল হেলথ অ্যান্ড হেলথ পলিসির গবেষক অনন্ত ভান অবশ্য এ প্রসঙ্গে ডিজিটাল সবাক্ষরতাকে দায়ী করেছেন। তাঁর মতে, ভারতে শহরাঞ্চলে ৬৯.৪ শতাংশ ও গ্রামীণ এলাকায় ৪৬.৬ শতাংশ মহিলার কাছে একটি মোবাইল রয়েছে যা তাঁরা ব্যবহার করেন, কিন্তু ৫৭.১ শতাংশও পুরুষের তুলনায় মাত্র ৩৩.৩ শতাংশ মহিলা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এরসঙ্গে রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা অপ্রচারেও বিভ্রান্ত হয়ে মহিলা টিকা নেওয়া থেকে পিছিয়ে পড়েছেন- বলেই মত অনন্ত ভানের। টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেসের অ্যাডভান্স সেন্টার ফর উইমেনস স্টাডিজের চেয়ারপার্সন বিন্ধুলক্ষী পি টিকার স্লট বুকিং পদ্ধতি আরও সহজ করে তোলার কথা বলেছেন যাতে পিছিয়ে পড়া মহিলারা অনায়াসেই তা ব্যবহার করতে পারে।
আরও পড়ুনঃ প্রোমোটারদের কোপে নেতাজির স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি, সংরক্ষণের আবেদন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জনস্বাস্থ্য আধিকারিক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পুরুষরা টিকা পাওয়ার জন্য বহুক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে পারলেও মহিলারা এতটা সময় লাইনে দাঁড়িয়ে ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহী নন। সমীক্ষায় দেখা গেছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসার পর মানুষের মধ্যে প্রতিষেধক নেওয়ার আগ্রহ আগ্রহ বাড়লেও মহিলারা পিছিয়েই আছেন।
দিল্লিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অভিজ্ঞ এক আধিকারিকের মতে, অনেকক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে কর্মীদের জন্য সংস্থার তরফে টিকাদানের আয়োজন করা হচ্ছে, সেখানে বাড়ির পুরুষ সদস্যরা টিকা পেলেও মহিলারা সেভাবে টিকা পাচ্ছেন না। বিএমসির তরফে জানানো হয়েছে, যেহেতু মুম্বইয়ে পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা বেশি তাই পুরুষদের মধ্যে টিকাকরণের সংখ্যাও বেশি।
তবে তারতম্য কমাতে মহিলাদের টিকাকরণের জন্য বিশেষ ক্যাম্প। গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য টিকাকরণের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন। তবে শুধু করোনার টিকাকরণ নয়, হেপাটাইটিস বা টিবি-র মতো শিশুদের টিকাদান কর্মসূচিতে, জাতীয় স্বাস্থ্য কর্মসূচির অধীনে মহিলারা সবসময় পুরুষদের থেকে পিছিয়ে থাকে।