ক্রীড়া

বাবার নামে বাড়তি তাগিদ অনুভব করেন কিয়ান

অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ

সেই আটের দশকের কাহিনী, ইরানের দুই ফরওয়ার্ড জামশিদ নাসিরি ও মজিদ বাসকার। একরাশ স্বপ্ন নিয়ে ইরান থেকে কলকাতায় এসেছিলেন ফুটবল খেলতে। মজিদ দেশে ফিরে গেলেও জামশিদ কলকাতাতেই সপরিবারে থেকে যান। জামশিদই ভারতে খেলতে আসা প্রথম বিদেশি ফুটবলার। যার এ দেশে বিভিন্ন ক্লাব টুর্নামেন্টে শতাধিক গোল করার নজির রয়েছে। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৬- এই সাত মরশুম কলকাতার ইস্টবেঙ্গল ও মহমেডান স্পোর্টিংয়ে খেলেছেন জামশিদ। লাল-হলুদ জার্সি গায়ে দু-দফায় ৬৪টি এবং মহমেডানে চার বছরে ৫৮ গোল করেন তিনি। সেই সময়ে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া বিদেশি ফুটবলারদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন জামশিদ। লাল-হলুদ জার্সি গায়ে একাধিক ডার্বি খেলেছেন, গোলও করেছেন। তবে মোহনবাগান জার্সি পরা হয়নি। সেই আক্ষেপ মেটালেন ছেলে। বাবার মুখেই ডার্বির গল্প অনেকবার শোনেন ছেলে কিয়ান। আর স্বপ্ন সত্যি হল ডার্বিতে গোল করে।

আরও পড়ুনঃ ফেডারার,জোকারকে টপকে ইতিহাস নাদালের

কিয়ান জুনিয়র বাংলা দলের হয়ে খেলার পর সেখান থেকেই মোহনবাগানের কর্তাদের চোখে পড়ে যান । তাদের যুব দলে খেলার সুযোগ পান। তখন অনুর্ধ্ব ১৬ ভারতীয় দলেও খেলেন । অনুর্ধ্ব ১৯ জাতীয় লিগ খেলার পরে নিজেকে ক্রমশ ফুটবলার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে শুরু করেন কিয়ান। গোয়ায় ট্রায়ালে দেখে তাঁকে দলে নিয়েছিলেন স্প্যানিশ কোচ কিবু ভিকুনা। একটাই ম্যাচ খেলেন সিনিয়র মোহনবাগানের হয়ে। তার পরেই এটিকে মোহনবাগান। আর শনিবার যা করলেন সেটা তো ইতিহাস। ম্যাচ শেষে কিয়ান জানান,”পরিবার থেকে অনেক সাহায্য পেয়েছি। যখন মোহনবাগানে যোগ দিই পরিবারের সবাই খুব খুশি হয়। তবে আমি আমার বাবার কাছে ঋণী, কারণ দুই প্রধানের সমর্থকদের চাপ আমাকে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা দেয়। যখন কেউ বলে বাবার মত খেলতে হবে তখন চাপ নয় একটা বাড়তি তাগিদ অনুভব করি।” এদিন ডার্বিতে ৯০ মিনিটের মাথায় ডেভিড উইলিয়ামসের হেড পোস্টে লেগে ফিরে আসার পরে সৌরভ দাসের ভুল ক্লিয়ারেন্সের সুযোগ নিয়ে বক্সের মাঝখান থেকে জোরালো শটে গোল করেন সম্পূর্ণ অরক্ষিত জামশিদ-পুত্র। তার তিন মিনিট পরেই ডান দিক দিয়ে বল নিয়ে বক্সে ঢোকা মনবীর সিং গোল করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাঁর পিছনে থাকা কিয়ান তেমনই আর এক জোরালো ও নিখুঁত শটে হ্যাটট্রিকের গোল করেন। সেই সময়েও তিনি ছিলেন পুরোপুরি ‘আনমার্কড’। কিয়ানের এই হ্যাটট্রিকেই এসসি ইস্টবেঙ্গলের ডার্বি-জয়ের আশা পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়।