মনোদীপ ব্যানার্জী, বহরমপুরঃ
দুপুর নিজস্ব গতিতে চলছে বিকেলের পথে, অপর প্রান্তে বাইকের গতিও বাড়ছে দ্রুত গতিতে। পিঠের ব্যাগে বিরিয়ানি, চিকেন, মটন থেকে হরেক রকম পদের খাবার আর নিজের পেটে তখন শুধুই জল। অপরের খাবার পৌঁছে দেওয়ার তাড়াই নিজের দুপুরের খাবার খাওয়া হয় অসময়ে। কখন খাবেন? প্রশ্নের উত্তরে অমলিন হাসি মুখে জবাব, “এই তো আর দুটো ডেলিভারি দিয়েই খেতে যাবো।“ উত্তর দাতার পরিচয় শহরের ‘ডেলিভারি বয়’।
বহরমপুর শহর এলাকায় ফোন অ্যাপে নিজের পছন্দের খাবার বুক করেন একাধিকজন। আর সেই পছন্দের খাবার বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসেন ডেলিভারি বয়েরা। ডেলিভারির ভিত্তিতে কমিশন হিসাবে দিন প্রতি মজুরি এদের। কখনও ৪০০ তো কখনও ৫০০। নেই কোন ডিউটি টাইম। কাজ বন্ধ হলে আয়হীন হতে হয় ওদের। মাঝে মধ্যে রাতের দিকে খাবার পৌঁছাতে গিয়ে অপ্রীতিকর অবস্থার মধ্যেও পড়তেও হয় বলে জানান এক ডেলিভারি বয়। তবে একই সাথে তিনি জানান, এক্ষেত্রে তারা সর্বদা পাশে পেয়েছেন প্রশাসনকে। নিজেদের পেশাগত অধিকার নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের কাছে মুখ খুলতেও দ্বিধান্বিত তাঁরা, যদি কাজটা চলে যায় এই ভেবে।
সুকান্তর রানাররা আজ খাকি পোশাকের সরকারি চাকরিজীবী ‘পিওন’। তবুও কালের সময়ে আজও রানারদের মতই শহরের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছুটে বেড়ায় যারা তারা আজ ‘ডেলিভারি বয়’। বেকারত্বর জ্বালায় শিক্ষার ডিগ্রিকে পিছনে রেখে বহু যুবক আজ এই পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেছে। পেটের টানে নিরূপায় হয়ে সব অনিয়মকে হাসি মুখে মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় কী? বহরমপুর শহর তো বটেই, কান্দি, জীবন্তি থেকেও বহুজন মুর্শিদাবাদের সদর শহরে আসে এই পেশার কারণে। সকাল ১১ টা তে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আবার রাত ১১ টা কখনও ১২ টা তে বাড়ি ঢোকা, এই রোজকার জীবন।