মোড়লদের ফতোয়ায় কথা বললেই ৫ হাজার টাকা জরিমানা

এনএফবি, পশ্চিম মেদিনীপুরঃ

মন্দিরের অধিকার ও পুজো করা নিয়ে গ্রামবাসীদের সাথে বিবাদ। আর সেই বিবাদের জেরে গ্রামের মোড়লদের আজব ফতোয়া। গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় হ্যান্ডবিল ও পোস্টারিং করে বয়কট করা হলো পুরোহিত পরিবারকে।
পোস্টারে লেখা, ওই পরিবারের সাথে যারা যোগাযোগ রাখবে তাদের পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। এমন ঘটনায় মঙ্গলবার চাঞ্চল্য ছড়ালো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার নাড়াজোল গ্রাম পঞ্চায়েতের নাড়াজোল গ্রামে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, তাদের সাথে নাড়াজোল গ্রামের বাসিন্দা মোহিনীমোহন চক্রবর্তীর সাথে মন্দিরে পুজো ও সম্পত্তি বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। বিষয়টি নিয়ে গ্রামকে উপেক্ষা করেই আদালতে মামলা করেন মোহনী চক্রবর্তী। সেই মামলাতে হেরে যায় মোহিনী চক্রবর্তী, হেরে যাওয়ার পরে মোহিনী চক্রবর্তী সল্টলেকের West Bengal Land Reforms and Tenancy Tribunal সিদ্ধান্ত নেয়।।এর ফলে গ্রামের মোড়লরা মোহিনী চক্রবর্তীকে গ্রাম থেকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেয়। শুধু তাই নয় প্রকাশ্যে নাড়াজোল এর বিভিন্ন জায়গাতে পোস্টারিং এর মাধ্যমে তারা ফতোয়া জারি করে। সেই পোস্টারে লেখা “নাড়াজোল গ্রামের বাসিন্দা মোহিনী চক্রবর্তী নিম্ন আদালতে হেরে যাওয়ার পর উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করেছে এর ফলে দেশ কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে যদি মোহিনী চক্রবর্তীর সাথে কেউ যোগাযোগ রাখেন বা তার বাণী মিলে যান তাহলে তাহলে সেই ব্যক্তির ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।”
নাড়াজোল তারাশঙ্কর শীতলা মাতা কমিটির নামে ওই পোস্টারগুলি দেওয়া হয়।

বিতর্কিত পোস্টার। নিজস্ব চিত্র


আর এই ফতোয় ঘিরেই পড়ে শোরগোল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দাসপুর পুলিশ। আধুনিক যুগেও দাসপুরের মতো জায়গায় এমন পরিবারকে বয়কট?এলাকার সমস্ত পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়। গ্রামের ওই মোড়লদের পাশাপাশি ওই পুরহিতকেও আগামী ১৯ শে মে দাসপুর থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তবে যাদের নামে এই ফতোয়া সেই পুরোহিত মোহিনী মোহন চক্রবর্তীর ছেলে রাজীব চক্রবর্তী জানান,নাড়াজোলের রাজার আমল থেকেই তাঁদের পূর্বপুরুষ এমনকি তাঁর বাবাও ওই মন্দিরের পুজারীর কাজে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু হঠাৎই ২০০৯ সাল নাগাদ গ্রামবাসীদের সাথে কিছু সমস্যার জেরে তাঁদেরকে আর পুজো করতে দেওয়া হয়নি। সেই মন্দির ও পুজোর কাজ ফিরে পেতেই তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।