এনএফবি ডেস্ক, নয়া দিল্লিঃ
ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধে নিরপেক্ষ অবস্থানের পুরস্কার পেতে চলছে ভারত। ভারতে সফররত রুশ বিদেশমন্ত্রীর ইঙ্গিতপূর্ণ বিবৃতি দেখেই সে বিষয়ে অনুমান করা যাচ্ছে।
শুক্রবার পুতিনের মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। এই বৈঠকে দিল্লির অন্যতম লক্ষ্য ছিল, সস্তায় রাশিয়ার থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার বিষয়টির অনুমোদন। এ প্রসঙ্গে লাভরভ বলেছেন, “ভারত কিছু কিনতে চাইলে আমরা তা নিয়ে আলোচনা করব।“
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের জেরে মস্কোর উপর অর্থনেতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ওয়াশিংটন। ভারতের যেমন রাশিয়ার থেকে সস্তায় অপরোশিত তেল কেনার দাবি ছিল, তেমনই মস্কোর দাবি, দ্বিপাক্ষিক লেনদেনে রুবেলের ব্যবহার। জানা গিয়েছে, লাভরভের এই দাবিতে সাড়া দিয়েছে ভারত। বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পর উভয় পক্ষই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের জন্য রুবেল-রুপি ব্যবহারে আগ্রহী।
ব্লুমবার্গের এক রিপোর্ট অনুসারে, বিশেষ ছাড়ে ভারতকে উচ্চ মানের অপরিশোধিত তেল বিক্রি করতে চায় রাশিয়া। প্রথম পর্যায়ে দিল্লি মস্কোর থেকে প্রায় ১.৫ কোটি ব্যারেল অপরিশোধিত তেল কিনতে পারে বলে খবর।
রাশিয়ার থেকে তেল না কিনতে ভারতের উপর আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দেশগুলির চাপ ছিল। যদিও রাশিয়া থেকে তেল আমদানিতে ভারত নিজের অবস্থানে অনড়। ভারতে সফররত ব্রিটিশ বিদেশ সচিব লিজ ট্রাসকে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন যে, ইউরোপের দেশগুলি রাশিয়া থেকে যে পরিমাণ তেল আমদানি করে, তার থেকে ভারত অনেক বেশি পরিমাণ তেল আমদানি করে থাকে। ভারতে তেলের চাহিদাও আছে। ফলে রাশিয়ার থেকে কম দামে অন্য কোনও দেশ তেল দিলে ভারত তা কিনবে।
রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেইই লাভরভ সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, “ভারতীয় বিদেশনীতি স্বাধীন ও বৈধ জাতীয় স্বার্থবাহী। রাশিয়ারও একই নীতি। তাই এই দুই বৃহৎ দেশ বন্ধু হতে পেরেছে ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক অংশীদার।“
রাশিয়া ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে দাবি করেছেন রুশ বিদেশমন্ত্রী। বলেছেন, “আলোচনার বৈশিষ্ট্য হল এমন সম্পর্ক যা আমরা বহু দশক ধরে ভারতের সঙ্গে গড়ে তুলেছি। উভয় দেশের সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বের।“
কিয়েভ ও চেরনিহিভে রুশ সেনার কার্যকলাপ কমানোর দাবি করেছে মস্কো। কিন্তু জানিয়ে দিয়েছে যে, এর মানে যুদ্ধ বন্ধ হয়নি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়টিও এ দিন দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীর বৈঠকে উঠে আসে। এপ্রসঙ্গে লাভরভ জানিয়েছেন যে, রাশিয়া ও ইউক্রেনের সমস্যা সমাধানে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে পারে ভারত। তিনি বলেছেন, “ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। যদি দিল্লি যুক্তিযুক্তভাবে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন ও সমস্যার সমাধান করতে পারে তবে তা সমর্থনযোগ্য।“