বিয়ের অনুষ্ঠানে জাঁকজমকের পরিবর্তে সামাজিক দায়বদ্ধতার নজির

এনএফবি, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারী ব্লকের জোড়দিঘী গোপালপুর এলাকার প্রত্যন্ত গ্রামে বিগত কয়েক বছর আগেও ছিলনা চলাচলের জন্য পাকা রাস্তা। শহরের যানজট থেকে অনেক দূরে সামাজিক দায়বদ্ধতার দিক থেকে বিবাহ অনুষ্ঠানের মধ্যেই মানবিক উদ্যোগ নিলেন গ্রামেরই এক কন্যা।

জানা গেছে বাবুল আলী খান ও জস্মিনা খানের একমাত্র কন্যা বাবলি সুলতানা খানের বিবাহ আয়োজনের কথা ছিল আর পাঁচটা সাধারণ বিবাহের মতই সামাজিক রীতি মেনে। যদিও করোনা আবহের কারণে প্রশাসনিক নির্দেশিকা মেনে বিবাহ অনুষ্ঠান বড় করা যাবে না সেই কথা তাদের মাথাতেও ছিল। আর এরই মাঝে গায়ে হলুদের দিন নতুন কনে একটু আলাদাভাবে বিবাহ অনুষ্ঠানের জাঁকজমকপূর্ণ কর্মসূচির বদলে সামাজিক দায়বদ্ধতার দিক থেকে পাশাপাশি পরিবেশ সচেতনতার বার্তা নিয়ে একটি বিরাট মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করলেন।
জোড়দিঘী ,গোপালপুর, কালিকামোরা সহ আশপাশের গ্রামের প্রায় ৩০ জন অসহায়- দুঃস্থ দিন আনা দিন খাওয়া মানুষজনদের বস্ত্র বিতরণ এবং প্রত্যেকের হাতে একটি করে বৃক্ষের চারা তুলে দেন নতুন কনে। গায়ে হলুদের দিন বস্ত্র বিতরণের পাশাপাশি বৃক্ষচারা তুলে দেওয়ার প্রসঙ্গে নতুন কনে বাবলি সুলতানা খান জানান “বর্তমানে এই করোনা পরিস্থিতিতে মানুষ বুঝতে পেরেছে অক্সিজেনের গুরুত্ব আর সেই কথা মাথায় রেখেই একটি গাছ একটি প্রাণ এই ব্রতকে পাথেয় করে প্রত্যেকের হাতে বস্ত্র বিতরণের পাশাপাশি বৃক্ষের চারা তুলে দিলাম।”
নতুন কনের পিতা বাবুল আলী খান বলেন” খুব দুঃস্থ পরিবার থেকে বড় হয়েছি, সে কারণে গরিবের দুঃখ বুঝি আমি।সারা বছরই নানান রকম ভাবে গরিব মানুষজনদের পাশে থাকার উদ্যোগ নিই। তাই নিজের কন্যার বিবাহের পয়সা বাঁচিয়ে এলাকার ভবঘুরে মানুষজনদের একটু সাহায্য করার উদ্যোগ নিলাম।”

স্বার্থের এই দুনিয়ায় নিজের বিবাহের পয়সা বাঁচিয়ে একদিকে গরিব মানুষদের বস্ত্র বিতরণ পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং পরিবেশ সচেতনতা বার্তা নিয়ে বৃক্ষচারা দানের উদ্যোগ বিগত দিনে দেখা যায়নি বলেই মত স্থানীয়দের। নতুন কনে বাবলি সুলতানা কে তার বিবাহিত জীবন যেন সুখের হয় এমনই কামনা জানিয়েছেন জোড়দিঘী গোপালপুর সহ সমগ্র দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সকল এলাকাবাসী ৷