মনোদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, মুর্শিদাবাদঃ
পৌষমেলা, সোনাঝুড়ির হাট এগুলোর সাথে বোলপুরের যোগ অবিচ্ছেদ্য। গত দুই বছর ধরে করোনার কারণে বন্ধ পৌষমেলা। তবে বসছে সোনাঝুড়ির হাট। সেই সোনাঝুড়ির হাটেরই টুকরো অংশ এবার দেখা গেল বহরমপুর গ্রান্ট হল ময়দানে। যদিও বহরমপুরের সোনাঝুড়ির হাটকে বোলপুরের সোনাঝুড়ির হাটের সাথে তুলনা করতে নারাজ মেলা কর্তৃপক্ষ। তাঁদের মতে, বাংলার হস্ত শিল্পীরা সোনা এবং তাঁদেরকে একত্রিত করে একটা ঝুড়িতে জায়গা দেওয়া হচ্ছে ও হাট বসানো হচ্ছে। তাই মেলার নাম দেওয়া হয়েছে সোনাঝুড়ির হাট।
বীরভূমের কাঁথা স্টিচের হরেক রকমের কাজ, মালদহ থেকে বেতের ঝুড়ি, বর্ধমান থেকে কাঠ পুতুল পূর্ব মেদিনীপুর থেকে আগত পট চিত্রের পসরা সাজিয়ে মেলায় নিজেদের শিল্প কে তুলে ধরেছে শিল্পীরা। মুর্শিদাবাদের লুপ্ত প্রায় শিল্প শোলার কাজও গুরুত্ব পেয়েছে বহরমপুরের সোনাঝুড়ির হাটে রয়েছে জেলার রেশম শিল্পও। বীরভূম থেকে আগত হেমন্ত পাল তার নিজের দোকান সাজিয়েছেন মেলায়। বোলপুরের সোনাঝুড়ির হাটেও বসেন তিনি, তবে বহরমপুরেও তার বিকিকিনি যে ভালোই হচ্ছে তা তিনি স্বীকার করেন। দিন প্রতি মেলায় লোক সমাগম বাড়ছে, ফলে বাড়ছে বেচাকেনাও, জানাচ্ছেন পূর্ব বর্ধমানের অলোক দাস। পাট শিল্পের পাশাপাশি তার কাছে রয়েছে আরও নানান জিনিসের সমাহার। রাজ্যের বহু জেলাতে সোনাঝুড়ির মেলায় তা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন তিনি।
ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন বেলা বাড়ার সাথে সাথে। বোলপুরের সোনাঝুড়ির হাট না ঘুরলেও বহরমপুরের সোনাঝুড়ির হাট মন্দ নয়, বলছেন অনেক শহরবাসী। কাঠের তৈরী হাতের কাজের প্রশংসা করে তা ব্যাগ বন্দি করতে করতে মাস্ক পরা মুখে এক ক্রেতার জবাব, “শিল্পকে ভালোবাসি, তাই সুন্দর জিনিস তাই হাল্কা দরদামেই নিয়ে নিচ্ছি।”
ক্রিয়েটিভ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা রাজশ্রী দাস জানান, “ক্রিয়েটিভ বেঙ্গল ফাউন্ডেশন ও বাংলার হস্তশিল্পীরা মিলে এই মেলাটি করে আসছে। রাজ্যে এটা ১৩ তম সোনাঝুড়ি হাট, বহরমপুরে এই মেলার এবারে দ্বিতীয় বর্ষ।” গতবারের তুলনায় এবারের মেলায় যে পরিমাণ বিকিকিনি হচ্ছে তাতে আগের বারের তুলনায় এবারে আর্থিক উন্নতি অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন তিনি। বহরমপুর পুরসভা ও মুর্শিদাবাদ হস্তশিল্প গোষ্ঠীর ভূয়সী প্রশংসাও করেন রাজশ্রী দাস। করোনার প্রকোপ অনেকটাই কমেছে, ফলে এমন হস্তশিল্পের মেলা আরও জমে উঠবে বলে মনে করছে শহরবাসী।