ফিচারস্থানীয়

বুনিয়াদপুরে পথ দুর্ঘটনা রুখতে কড়া নজরদারির ব্যবস্থা

এনএফবি, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বুনিয়াদপুর ১১ নং ওয়ার্ডের সরাইহাট মালম থেকে বদলপুর পর্যন্ত পাকা রাস্তায় শুকানো হচ্ছে নতুন বোরো ধান ও খড়। এতে মাঝেমধ্যেই রাস্তায় ধান মেলে কোথাও বা খড় বিছিয়ে আটকে আছে পুরো রাস্তা। এমনকি ঢেকে রাখা হয়েছে স্পিড ব্রেকার গুলো। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন সহ পথ চলতি মানুষ চলাচলের ক্ষেত্রেও সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

গত ২০২০ সালে তপন থানার বিডিও ছগেল মুক্তাং তামাং করদহ রোডে গাড়ি নিয়ে এইরকম ধানের খড় বিছানো রাস্তা দিয়ে যাবার পথে গাড়িটি স্লিপ করে রাস্তার ধারে একটি গাছকে সজোরে ধাক্কা মারে। তার আঘাত গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে শিলিগুড়ি মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়। শিলিগুড়িতে তার শেষ রক্ষা হয়নি, ঐ ঘটনায় বিডিওর মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছিল। ঘটনার পর প্রশাসন সেই সময় নড়ে চড়ে বসেছিল। গোটা জেলাজুড়ে মাইকিং ও প্রশাসনের নজরদারিতে কিছুটা হলেও রাস্তায় ধান ও খর বিছানোর কাজ বন্ধ হয়েছিল। দুই বছরের সেই স্মৃতি মুছে যেতে না যেতেই ফের শুরু হয়েছে রাস্তায় বোরো ধান ও খড় বিছানোর কাজ । বৃষ্টি আসার আগেই কে কত তাড়াতাড়ি খড়গুলিকে শুকিয়ে শুকনো ধান গোলায় তুলবেন তার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায় । এই কাজের জন্য বেছে নেওয়া হয় শহর ও গ্রাম গঞ্জের পিচ ঢালা রাস্তাগুলোকে। প্রায়শই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় ছোট, বড় যানবাহন সহ পথচারীদের। যেভাবে রাস্তায় ধান, খড় মেলে দেওয়া হয়েছে কোন মোটরসাইকেল সহ যে কোন যানবাহন সাধারণ গতিতে থাকলেও বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে। আর বৃষ্টি হলে রাস্তাগুলো পিচ্ছিল হয়ে ভয়ংকর রূপ নেয়। এ বিষয়ে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মানছে না সাধারণ মানুষ। টোটো চালক মিলন দাস বলেন, “যেভাবে রাস্তায় খড় বিছিয়ে রেখেছে, কখন যে কি হয় বলা যাবে না। টোটো জোরে চালাতে পারছিনা। ব্যাটারির চার্জ তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাচ্ছে।” মোটরসাইকেল চালক গনেশ মাহাতো অভিযোগ করে বলেন, “আমি সাধারণ গতিতেই বাইক টি চালিয়ে যাচ্ছিলাম। ধানের খড় থাকাতে সামান্য ব্রেক কষতেই ছিটকে পড়েছি। যদিও সেভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে পাকা চালক না হলে বিপদ ঘটে যেত। প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার।”

নিজস্ব চিত্র

রাস্তায় ধান মেলতে আসা বুধো সরকার কে জিজ্ঞাসা করায় তিনি জানান, “আমার জানা নাই যে রাস্তায় ধান ও খড় বিছিয়ে রাখার নিষেধ আছে। এখন থেকে আর করব না।” বুনিয়াদপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান অখিল চন্দ্র বর্মন বলেন, “ধানচাষীরা এভাবে রাস্তায় খড় বা ধান শুকাতে পারে না। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ এই নির্দেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”