এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে সফল ট্রেকিং অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারের

এনএফবি, জলপাইগুড়িঃ

বয়স যে কেবলমাত্র একটি সংখ্যা তা আরও একবার প্রমাণ করে জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দা ৬৫ বছরের প্রবীণ সুজিত কুমার মন্ডল। জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার সুজিত বাবু। সম্প্রতি এভারেস্ট বেস ক্যাম্প ট্রেকিং সফলভাবে সম্পূর্ণ করলেন। তাঁর সঙ্গী ছিলেন জলপাইগুড়ি শহরের এক যুবক শুভজিৎ দাস। শুভজিৎ পেশায় ব্যবসায়ী।

এভারেস্ট বেস ক্যাম্প ট্রেকটি পৃথিবীর দশটি বিখ্যাত ট্রেকের অন্যতম। সময় ও দূর্গমতার নিরিখে কঠিনতম। এহেন ট্রেকের প্রস্তুতি প্রায় এক বছর আগে থেকে শুরু করেন সুজিত বাবু। বয়সজনিত শারীরিক দুর্বলতা ও ভাঙ্গা পায়ের জন্য নিয়মিত ফিজিওথেরাপি ও শরীরচর্চার পাশাপাশি প্রতিদিন সকালে এক ঘন্টা প্রাতঃভ্রমণ করে গেছেন গত এক বছর ধরে। শুভজিৎ দিনে শরীরচর্চার সময় না পাওয়ায় নিয়মিত রাতে পাঁচ কিলোমিটার দৌড় অনুশীলন করতেন।

গত ১০ অক্টোবর জলপাইগুড়ি থেকে রওনা হয়ে নেপালের কাকরভিটা সীমান্ত দিয়ে সালেরী পৌঁছান সুজিত বাবু ও শুভজিৎ। খারাপ আবহাওয়ার জন্যে সেখানে একদিন অপেক্ষা করে অতি দুর্গম পথে একে একে থামদারা, পাইয়া, ফাকদিং, নামচেবাজার, পাঙবোচে, ডিংবোচে, লোবুচে, গোরকশেপ হয়ে ১২ দিন পর এভারেস্ট বেস ক্যাম্প পৌঁছান ২২ অক্টোবর।

এভারেস্ট বেস ক্যাম্পের উচ্চতা ৫৩৬৪ মিটার (১৭৫৯৮ ফুট)। এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে বায়ুমণ্ডলের অক্সিজেনের মাত্রা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় অর্ধেক। স্বল্প অক্সিজেনে শরীরকে খাপ খাওয়াতে অতিরিক্ত দু’ তিন দিন aclimatization ডে রাখা হয়।

এক‌ই পথে সেখান থেকে নেমে আসতে সময় লাগে প্রায় ৮ দিন। গতকাল ২৮ অক্টোবর তারা কাকরভিটা হয়ে জলপাইগুড়ি ফিরে আসেন। পুস্পস্তবক দিয়ে তাদের স্বাগত জানান শুভানুধ্যায়ীরা।

ট্রেক প্রসঙ্গে সুজিতবাবু জানান, এটি একটি অসাধারণ ও অনন্য অভিজ্ঞতা। সম্পূর্ণ নিজস্ব উদ্যোগে তারা ট্রেকটি সম্পন্ন করেন। সারা বিশ্বের ট্রেকারদের সঙ্গে এই রুটে একসাথে ট্রেক করা যায়। তাদের সঙ্গে মতবিনিময় ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করা যায়। এই ট্রেক সম্বন্ধে মতামত জানাতে গিয়ে শুভজিৎ বাবু জানান সুজিত বাবু তার বাবার সমবয়সী। তিনি আরও জানান যে, বিপদসঙ্কুল পথে সুজিত বাবু সব সময়ই তাকে সহযোগিতা করেছেন।