ক্রীড়া

হাওড়ার অচিন্ত্যর সোনায় গর্বিত দেশ

অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ

কমনওয়েলথ গেমসে ভারতকে ভারোত্তোলনে সোনা এনে দিলেন অচিন্ত্য শেউলি। স্ন্যাচে গেমস রেকর্ড গড়ার পর সম্মিলিত স্কোরে রেকর্ড গড়ে তিনি সোনা জিতলেন ৭৩ কেজি বিভাগে। স্ন্যাচে প্রথম প্রয়াসে তোলেন ১৩৭ কেজি, দ্বিতীয় প্রয়াসে ১৪০ কেজি ও তৃতীয় প্রয়াসে ১৪৩ কেজি। এর ফলে মালয়েশিয়ার মহম্মদ এরি হিদায়তের চেয়ে এগিয়ে থাকেন অচিন্ত্য। হিদায়ত ১৩৮ কেজি সর্বাধিক তোলেন স্ন্যাচে। কানাডার শাড ডারসিগনি তোলেন সর্বাধিক ১৩৫ কেজি। এরপর ক্লিন অ্যান্ড জার্কেও দারুণ শুরু করেন শেউলি। তিনি ক্লিন অ্যান্ড জার্কে প্রথম প্রয়াসে অচিন্ত্য ১৬৬ কেজি তোলেন। ফলে সম্মিলিত স্কোর গিয়ে দাঁড়ায় ৩০৯, যা নয়া গেমস রেকর্ড। তার আগে মালয়েশিয়ার প্রতিপক্ষ প্রথম প্রয়াসে ১৬৫ কেজি তুলে সম্মিলিত স্কোর ৩০৩-এ পৌঁছে গিয়েছিলেন। সোনা জয়ের লড়াই তাই হাড্ডাহাড্ডি অবস্থায় পৌঁছে যায়। দ্বিতীয় প্রয়াসে শেউলি ১৭০ কেজি তুলতে গিয়ে পারেননি। কিন্তু তখনও তিনি লিড ধরে রাখেন। এরপর তৃতীয় প্রয়াসে তিনি ১৭০ কেজি তুলে গেমস রেকর্ডকে আরও উন্নত করেন। তাঁর সম্মিলিত স্কোর দাঁড়ায় রেকর্ড ৩১৩ কেজি। কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম সোনা জয়ের পর সে কথাই বলেছিলেন অচিন্ত্য। জিমে যোগ দেওয়ার পর জীবনটা খুবই কঠিন ছিল। ট্রেনিং, স্কুল, সঙ্গে সেলাইয়ের কাজ। তিন বেলার খাবার জোটানো কঠিন ছিল। বাবা বেঁচে থাকাকালীন, মাকে কোনও কাজ করতে হয়নি। বাবার মৃত্যুর পর মাকেও সেলাইয়ের কাজ করতে হয়। অচিন্ত্য এবং তার দাদাও একই কাজ করতে বাধ্য হন। দাদা ভারোত্তোলনের ট্রেনিং নিতেন। অচিন্ত্যর সঙ্গে ভারোত্তোলনের পরিচয়ও হঠাৎ করেই।

গ্রামে বাড়ির কাছেই ঘুড়ি ওড়াচ্ছিলেন। ভোকাট্টা একটা ঘুড়ি কাছেই জিমের সামনে পড়ে। সেখানেই নজরে পড়ে অনেকেই জিম করছেন। তাঁর দাদাও রয়েছেন। সেই থেকেই ভারোত্তোলনে প্রেম, কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে দু বার সোনার পদক এবং এবার বার্মিংহ্যাম কমনওয়েলথ গেমসে রেকর্ড গড়ে সোনার পদক পেলেন অচিন্ত্য।