এনএফবি, কোচবিহারঃ
ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাওয়া এক পরিযায়ী শ্রমিকের রহস্যমৃত্যু। নিজের কোয়ার্টারের বাথরুমে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। বেঙ্গালুরুতে কাজ করতে যাওয়া মাথাভাঙ্গা শহর সংলগ্ন হাজরাহাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব খাটেরবাড়ির এক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুতে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। মৃতের নাম পর্বনাথ বর্মন। রবিবার রাতে কোয়ার্টারের বাথরুম থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
এদিন সকালে মৃত্যুর খবর পৌঁছাতেই রহস্য দানা বেঁধেছে এলাকায়। অভাবের সংসারের হাল ফেরাতে এক মাস পাঁচ দিন আগেই পরিবারের সদস্যদের ছেড়ে বেঙ্গালুরুতে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলেন পর্বনাথ। ঘোকসাডাঙ্গার এক ঠিকাদারের অধীনে সেখানে রং মিস্ত্রির কাজ করছিলেন তিনি। এলাকার আরও চারজনের সঙ্গে পর্বনাথ কাজ করতেন। কিন্তু এদিন বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো তাঁর মৃত্যু সংবাদ এলাকায় পৌঁছায়। পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন গলায় গামছার ফাঁস লাগিয়ে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। সেখানকার পুলিশ তাঁর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করেছে।
এই মর্মান্তিক খবরে ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তাঁর স্ত্রী জ্যোতিকা ঘন ঘন মূর্ছা যাচ্ছেন। বাবার জন্য কেঁদে অস্থির নবম শ্রেণির পিংকি ও ক্লাস সেভেনের সুজন। ছেলের শোকে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন বাবা মা-ও। বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন প্রতিবেশী ও আত্মীয়-পরিজনরা। চোখের কোণে জল মুছতে দেখা গিয়েছে তাঁদেরও পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাতে বাড়িতে এসেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও।
পর্বনাথের বাবা অহিন্দ্র বাবু জানান, ‘দিন চারেক আগেই মোবাইলে ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছিল। সে বাড়ি আসার জন্য টাকাও চেয়ে পাঠিয়েছিল। কিন্তু এদিন সকালে এই খবর পাই। কোত্থেকে কী হল বুঝতে পারছিনা। বিষয়টি মাথাভাঙ্গা থানার পুলিশকে জানানো হয়েছে। এব্যাপারে জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে একাধিকবার ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু ফোন বেজে গেলেও রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ফোন করলেও রিসিভ করেননি পর্বনাথের এক সঙ্গীও।’
হাজরাহাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হাসিম আলির কথায়, পর্বনাথের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ঘটনার সঠিক তদন্ত হওয়া চাই। বাড়িতে দেহ আনার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রবিউল মিয়াঁ বলেন, পর্বনাথ এলাকায় ভালো ছেলে হিসাবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর অকাল মৃত্যু মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে।