নতুন-পুরাতন দ্বন্দ্বে নির্দল কাঁটা বিজেপির অন্দরে

এনএফবি, মালদাঃ

পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে গোষ্ঠী কোন্দল বিজেপির অন্দরে। ঘটনাটি ঘটেছে, পুরাতন মালদা ব্লকের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে। সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২ জন বিজেপির বর্তমান এবং প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য ডিসিআর কেটে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, পুরনোদের ভুলে নতুন যারা দল করছে তাদেরকে বেশি করে প্রাধান্য দিচ্ছে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। শুধুমাত্র গ্রাম পঞ্চায়েতই নয়, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদের প্রার্থী পদের ক্ষেত্রেও দ্বিচারিতার মনোভাব দেখাচ্ছে দলের জেলা নেতৃত্ব। তাই আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে ১২ জন বিজেপি নেতা মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে ডিসিআর কেটেছেন। প্রার্থী না হতে পারলে তারা নির্দল থেকেই দাঁড়ানোর কথাও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
ইতিমধ্যে পুরাতন মালদা ব্লকের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি দলের প্রাক্তন প্রধান উকিল মন্ডল এবং পুরাতন মালদা পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা নিতাই মন্ডলের নেতৃত্বে ইতিমধ্যে ১২ জন বিজেপির গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য ডিসিআর কেটেছেন প্রার্থী হিসেবে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এমনকি আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত নির্দল পরিচালিত বোর্ড গঠন করবে বলে হুংকার দেন বিজেপির বহিস্কৃত নেতা নিতাই মন্ডল।
দলের অন্দরে ক্ষোভের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি তাপস গুপ্ত। তিনি বলেন, দলের অন্দরে ক্ষোভ আছে। বিজেপির মনোভাবাপন্ন কর্মীরা নির্দলে দাঁড়ালে দলের ক্ষতি হবে। তবে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশাবাদী।
এদিকে বিজেপির অন্দরের কোন্দলকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। পুরাতন মালদা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সদস্য সুশান্ত কুন্ডু বলেন, এই ঘটনা থেকে প্রমাণ হয় যে বিজেপির অন্দরে কোন্দল আছে। কেবলমাত্র তৃণমূলকে বদনাম করার জন্য বিরোধীরা তৃণমূলের কোন্দল নিয়ে কথা বলেন। ভোটে মানুষ এর যোগ্য জবাব দেবে।
সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি দলের প্রাক্তন প্রধান উকিল মন্ডল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমি সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের দায়িত্বে ছিলাম। এক বছর আগে অনাস্থার মাধ্যমে এই গ্রাম পঞ্চায়েতটি দখল করে তৃণমূল। তারপর থেকে একনিষ্ঠ ভাবে আমি দলও করে এসেছি। কিন্তু এখন শুনতে পাচ্ছি। আমার প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আমি তো একজন রানিং মেম্বার। তা সত্ত্বেও কেন আমি প্রার্থী হতে পারব না, সেটাও দলের কাছে জানতে চেয়েছি। পাশাপাশি এরকমই এদিন ১২ জন পঞ্চায়েত সদস্য ডিসিআর কেটেছি, প্রয়োজনে নির্দল প্রার্থী হবো বলে।
পুরাতন মালদার বিজেপি দলের বিধায়ক গোপালচন্দ্র সাহা জানিয়েছেন, প্রার্থীর বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে রাজ্য নেতৃত্ব দেখছে। এখানে অসন্তোষের কোন ব্যাপার নেই। জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব যেটা ঠিক করবে, সেভাবেই আমাদেরকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে একজোট হয়ে লড়তে হবে।