এনএফবি, কলকাতাঃ
এসএসসি নিয়োগ মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ রাজ্যের। বৃহস্পতিবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চ নবম-দশম শিক্ষক নিয়োগ মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। এ বিষয়ে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চে পাল্টা মামলা দায়ের করেছে সরকার। ফলে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা যাওয়ার সম্ভাবনা।
উল্লেখ্য, এসএসসি গ্রুপ-ডি কর্মী নিয়োগে দূর্নীতির অভিযোগে এরপূর্বে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। গতকাল অনিন্দিতা বেরা নামে একজনের দায়ের করা মামলায় জমা করা নথি দেখে আগের সিবিআই তদন্তের নির্দেশের সঙ্গেই শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলা যুক্ত করেছেন বিচারপতি। আর দু’ক্ষেত্রেই নিয়োগ দুর্নীতির ‘কমন ফ্যাক্টর’ হিসেবে আদালত এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহাকে চিহ্নিত করেছেন। আগের গ্রুপ-ডি মামলার সূত্রে আদালতের নির্দেশে শান্তিপ্রসাদকে জেরা করেছে সিবিআই। সেই সূত্রে সিবিআই যদি প্রভাবশালীদের যোগ পায়, তবে তাদেরও জেরা করতে পারে আগেই নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। বৃহস্পতিবার ফের তা স্মরণ করিয়ে দেন বিচারপতি। বৃহস্পতিবারই শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় নতুন করে একটি এফআইআর করার নির্দেশও দেওয়া হয়।
নবম-দশমে শিক্ষক নিয়োগে বেনিয়মের ২৭টি উদাহরণ মামলাকারীর তরফে আদালতে পেশ করা হয়। মামলাকারীর নাম ওয়েটিং লিস্টের ১২১ নম্বরে থাকলেও তিনি চাকরি পাননি। অথচ সেই তালিকায় ১৬৮ নম্বরে থাকা একজন চাকরি পেয়েছেন। ওবিসি শ্রেণিভুক্তকে অন্য কোটায় চাকরি দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে বলেও নথি পেশ করা হয়। মাধ্যমিকে ৫০ শতাংশও পেয়েছেন এমন এক জনকে চাকরি দেওয়ার সময়ে মেধা তালিকায় তাঁর সেই নম্বর ৬০ হয়ে গিয়েছে বলেও উদাহরণ তুলে ধরা হয়। তালিকায় নাম না থাকা সত্ত্বেও পঞ্চায়েত প্রধান বা জনপ্রতিনিধিদের আত্মীয়দের চাকরি দেওয়া হয়েছে বলেও নথি পেশ করা হয়।
মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও সুদীপ্ত দাশগুপ্ত দাবি করেন সব নিয়োগের তালিকা প্রকাশ করা হোক। যদিও এসএসসির তরফে আইনজীবী কিশোর দত্ত বলেন, নিয়োগের সুপারিশ এসএসসি দেয়নি। তবে আদালত সুযোগ দিলে এসএসসি এই বেআইনি নিয়োগের অভিযোগের তদন্তে প্রস্তুত। রাজ্যের তরফে আইনজীবী ভাস্করপ্রসাদ বৈশ্য বলেন, সিবিআই তদন্তের নির্দেশের আগে রাজ্যকে আলাদা করে তদন্তের সুযোগ দেওয়া হোক। মাত্র দু’সপ্তাহের জন্যে সেই সুযোগ দিয়ে আদালত দেখুক, রাজ্য ঠিক পথে তদন্ত করছে কি না। যদিও বিচারপতি শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকেই তদন্তের দায়িত্ব দেয়।
সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আজকে রাজ্যের করা মামলায় ডিভিশন বেঞ্চ কী নির্দেশ দেয়, সেই দিকেই তাকিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল।
আরও পড়ুনঃ নবম-দশম শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ