এনএফবি, মালদাঃ
তাপমাত্রার পারদ চড়ছে।বেলা বাড়লেই গনগনে রোদে অস্থির অবস্থা। এর মধ্যে যদি জল না মেলে? এমনই পরিস্থিতির শিকার মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের মানুষ। কল আছে, জল নেই!
তীব্র পানীয় জলের কষ্টে ভুগছেন বাসিন্দারা। জলের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে বাপের বাড়ি চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন স্ত্রী ও পুত্রবধুরা। ফলে দূর দূরান্ত থেকে জল আনতে বাধ্য হচ্ছেন গ্রামের পুরুষ মানুষেরা। এই পানীয় জল সংকটের এক ভয়াবহ দৃশ্য ফুটে উঠেছে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নম্বর ব্লকের রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের মুড়াগাছি গ্রামে।
জানা গেছে, গ্রীষ্মের শুরু থেকেই পানীয় জলের সংকটে ভুগছে ওই গ্রামের প্রায় ৪০০টি পরিবার। নলকূপ থেকে জল উঠছে না। জলের জন্য হাহাকার করছে গোটা গ্রাম। পুকুরের নোংরা জল দিয়ে চলছে বাসন মাজা ও স্নান। কেউ কেউ আবার পুকুরের জল দিয়েই করছে ভাত রান্না। গ্ৰাম থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে মাঠে সেচের কাজে ব্যবহৃত সাবমারসিবল থেকে জল ভারে করে নিয়ে আসছেন গ্রামের পুরুষরা। সেই জল পান করছেন পরিবারের সকলে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এই গ্রামে কোনো পিএইচই সংযোগ নেই। বছর চারেক আগে গ্রামে সরকারি থেকে দুটো সাবমারসিবল বসানো হলেও মাসখানেক যেতে না যেতেই সেগুলো বিকল হয়ে পড়েছে। সেই সুযোগে দুষ্কৃতীরা রাতের অন্ধকারে মটর দুটি চুরি করে নিয়ে গেছে। এমনকি গ্রামে থাকা একটি সরকারি নলকূপ দীর্ঘদিন ধরে ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে। প্রশাসনকে বারবার অভিযোগ করা সত্ত্বেও কোনও কাজ হচ্ছে না।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মাস খানেক আগে একটি সাব মারসিবল বসালেও সেই সাব মারসিবলের জল পান করতে দিচ্ছেন না জমির মালিক বাবুল আক্তার বলে অভিযোগ। অপরদিকে পঞ্চায়েত সদস্য মজিবুর রহমান নিজের বাড়িতে সরকারি সাবমারসিবল বসিয়ে একাই ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসীরা।
যদিও তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ একেবারে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। জমির মালিক বাবুল আক্তার বলেন, তার জমিতে সাবমারসিবলটি বসানো হলেও পাড়ার সবাই জল পান করছে। জল পান করতে কাউকে সে কখনও বাধা দেননি। তার বিরুদ্ধে ভুয়ো অভিযোগ তুলছেন।অপরদিকে পঞ্চায়েত সদস্য মজিবুর রহমান জানান, সে নিজের টাকায় বাড়িতে সাবমারসিবলটি বসিয়েছেন।না জেনেই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন।
হরিশ্চন্দ্রপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ কেরামুদ্দিন আহমেদ জানান, প্রায় দুই মাস থেকে জল সংকটে ভুগছে মুড়াগাছি গ্রামের মানুষ। জলের অভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে রান্না পর্যন্ত হয় না। তিনি হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসুকে গ্ৰামের জলে সমস্যাটি লিখিত আকারে জানিয়েছেন। শীঘ্রই প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানীয় জলের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান।