অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ
বাঁচানো গেলো না। অকালে চলে গেলেন মোহনবাগান সমর্থক অনির্বান নন্দী। বহুদিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন পাঁচ মাস আগে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন অনির্বাণ নন্দীর হাতে বাকি রয়েছে আর মাত্র পাঁচ মাস সময়। তার মধ্যেই প্রতিস্থাপন করতে হবে তার দুটো কিডনি। তা যদি না হয় তাহলে ঘটতে পারে প্রাণ সংশয়। বাবা মা চলে মারা যান আগেই।
অনির্বাণ নন্দী একেবারেই একা। এমন অবস্থায় এই খবরে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল অনির্বাণের। মুখের মিষ্টি হাসি বিষাদের মেঘে ঢাকা পড়েছে।
অনির্বাণ নন্দীকে ময়দানে সবাই অ্যানি বলেই জানে তাঁর কিডনি প্রতিস্থাপন করতে ১৫-১৬ লক্ষ টাকা দরকার ছিল। অনেক ফুটবল ভক্ত পাশে থাকলেও এতো টাকা জোগাড় সম্ভব হয়নি মোহনবাগান ক্লাব থেকেও মৌখিক প্রতিশ্রুতিই দেওয়া হয়। কিন্তু আদ্যন্ত ফুটবলপ্রেমী অ্যানিকে বাঁচাতে চেষ্টার কোনও কসুর করেনি তিনটি ফুটবল ক্লাবের সমর্থকেরা। বিভিন্ন ফুটবল ক্লাব এবং ফ্যানপেজগুলি অনির্বাণের হয়ে সাহায্য চেয়ে মাঠে নামে। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের অনুষ্ঠান দাদাগিরিতেও অংশ নেন তিনি। ফেসবুক পোস্ট করে বাধ্য হয়ে বাগান সমর্থক লেখেন, “আমি বড্ড অসহায়। কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য কোনও ডোনারই পাওয়া যাচ্ছে না। আমার ডায়ালিসিস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছ। এই ধকল আমি আর নিতে পারছি না। পাশাপাশি অর্থের চিন্তা তো আছেই। দয়া করে একটু পাশে থাকবেন। বাঁচতে চাই আমি।” শেষবার অষ্টমীর দিনে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করেন নীল পাঞ্জাবী পড়ে তারপরই তার চলে যাওয়া দ্বাদশীর দিনে। যেহেতু ময়দান আগামী ১৫ অক্টোবর অবধি বন্ধ তাই দেহ মোহনবাগান ক্লাবে আনা হবে কিনা ঠিক হয়নি এখনও। মন ভার কলকাতা ময়দানের।
আর মোহনবাগান গেলে দেখতে পাওয়া যাবে না অনির্বানকে। করোনার সময় এটিকে মোহনবাগান দলের খেলা দেখতে নিজের পয়সা খরচা করে গোয়া ছুটে গেছিলেন এমন সমর্থক কলকাতা ময়দানে বিরল।