ধৈর্য্য রাখতে হবে সবাইকে চেন্নাই ম্যাচ হেরে বার্তা স্টিফেনের

স্পোর্টস ডেস্ক, এনএফবিঃ

ফের একঝাঁক ভুল ও সেই ভুলের খেসারত দিতে হল ইস্টবেঙ্গল-কে। একাধিক গোলের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও আইএসএলে ঘরের মাঠ যুবভারতীতে চেন্নাইয়ান এফসি-র কাছে হারল ইস্টবেঙ্গল এফসি। শুক্রবার কলকাতার বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে চেন্নাই ১-০-য় জিতে লিগ তালিকায় পাঁচ নম্বরে উঠে এল। পাঁচ ম্যাচে চার নম্বর হারের পর ইস্টবেঙ্গল নেমে গেল দশ নম্বরে। স্বাভাবিকভাবেই কোচ স্টিফেন কনস্টানটাইনের স্টাটেজি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

ম্যাচ হারের পরে স্টিফেন জানালেন, “আমি এখানে অজুহাত দিতে আসিনি । আমরা দু-তিনটে গোলের সুযোগ পেয়েছি। তার মধ্যে একটাও কাজে লাগাতে পারলে বিরতিতে আমরা ১-০-য় এগিয়ে থাকতে পারতাম। তা হলে ম্যাচটাই অন্য রকম হত। গোলের সামনে আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে হবে। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা যথেষ্ট ভাল খেলেছি। তবে ওরা কর্নার থেকে অনায়াসে একটা গোল পেয়ে যায়। যা খুবই হতাশাজনক। ওই গোলটা খাওয়া উচিত হয়নি। গোলের পরে ওদের যখন একজন কমে গেল, তার কিছুক্ষণ পরেই আমাদেরও একজনকে মাঠ ছাড়তে হল। এই ধরনের ভুল করলে চলে না। এই ভুলগুলোরই খেসারত দিতে হল আমাদের। পর পর দুটো হার স্বীকার করতে হয়েছে। পরপর তিনটে ম্যাচেও হারতে পারি। কিছু করার নেই। ধৈর্য্য রাখতে হবে সবাইকে। ফুটবলারদের আর একটু সময় দিতে হবে।”

সার্থক গলুইয়ের মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে বিতর্ক হয়। স্টিফেন জানাচ্ছেন,
“ওটা খুবই বাজে ভুল। ওই সময় আমরা একজন বেশি নিয়ে খেলছিলাম। এক গোলে পিছিয়েও ছিলাম। তা সত্ত্বেও এ রকম ভুল হাস্যকর। এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে কোনও পরিকল্পনা করা যায় না। প্রথমার্ধে আমরা সতর্ক ভাবে খেলিনি। সুযোগ কাজে লাগাতে পারিনি। তখন থেকেই হারতে শুরু করে দিই।”

এরপরই ব্রিটিশ কোচ জানাচ্ছেন, “আমাদের আবার মাঠে ফিরে যেতে হবে। আরও বেশি পরিশ্রম করতে হবে। কোচ হিসেবে আমারই দায়িত্ব এখন বেশি। আমাদের আরও ভাল খেলতে হবে। আজ বিরতিতেই কিছুটা সমাধান বলে দিয়েছিলাম। কিন্তু ওই গোলটাই সব শেষ করে দিল। তাই আমাদের আরও পরিশ্রম করতে হবে। সঠিক জায়গায় সঠিক খেলোয়াড় দরকার। আমরা অনিকেতকে ওপরের দিকে খেলানোর চেষ্টা করি। সিদ্ধান্তটা কাজে আসেনি। দলে পরিবর্তন আনা হয় খেলাটাকে বদলানোর জন্য। কিন্তু আমাদের পরিবর্ত খেলোয়াড়রা তা করতে পারেনি।”

সুযোগ পেয়েও দলের একাধিক গোলের সুযোগ নষ্ট নিয়ে স্টিফেন জানাচ্ছেন,
আমি জানি না, “এই প্রশ্নের কী উত্তর দেব। অনুশীলনে আমরা যথেষ্ট অনুশীলন করি। যাতে বল গোলের বাইরে দিয়ে না চলে যায়, সে জন্য। একেকটা মুভের ক্ষেত্রে দু-তিনবার করে অনুশীলন করানো হয়, যেখানে গোলকিপারকেও রাখা হয়। তারপরেও যদি এই সব ভুল হয়, তা হলে তা খুবই হতাশাজনক। আমরা যদি সুযোগ তৈরি করতে না পারতাম, তা হলে আমি আরও চিন্তিত হতাম। কিন্তু সেটা তো হচ্ছে না। জেতা ম্যাচ হেরে যাচ্ছি। এখন বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে পরের ম্যাচের প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। কেরালার বিরুদ্ধে ম্যাচে আমরা ভাল খেলার পর শেষ ১৫ মিনিটে হেরেছি। দ্বিতীয় ম্যাচে শেষ মুহূর্তের গোলে হেরেছি। তৃতীয় ম্যাচে আমরা জিতি। ডার্বিতে যে কেউ জিততে বা হারতে পারে। আজ নিজেদের ভুলে হেরেছি। আমার মনে হয় না আমরা ভাল অবস্থায় নেই। আমরা অবস্থা পরিবর্তনের জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছি। গত বছর সারা মরশুমে একটা ম্যাচে জিতেছিলাম আমরা। তার আগের বছরে দুটো জয় ছিল। এ বার আমাদের আরও চেষ্টা করতে হবে। ধৈর্য্য হারালে চলবে না। খেলোয়াড়দের ভাল ম্যাচ, খারাপ ম্যাচ আসে যায়। আজ আমরা দ্বিতীয়ার্ধে ভাল খেলতে পারিনি। প্রথমার্ধে আমরা ভাল খেলেছি। দু-তিনটে সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছি। আমাদের ভুলের খেসারত দিতে হয়েছে। তাই বলে আমরা খারাপ দল হয়ে গেলাম না। ভুল শোধরানোর কাজ করতে হবে। উন্নতির জায়গা আছে। কাল থেকে সেই চেষ্টা শুরু হবে।”

অ্যালেক্স লিমার অভাব কি ভোগাচ্ছে দলকে! স্টিফেন বলেন, “লিমা দ্বিতীয় ম্যাচের প্রথম মিনিটেই চোট পায়। তা সত্ত্বেও ও সেই ম্যাচে ৭৫ মিনিট খেলেছিল। পরের ম্যাচে আমরা জিতি। পরের দুটো ম্যাচেই আমরা ভাল খেলি। ওর হ্যামস্ট্রিং সমস্যা রয়েছে। ও খুবই ভাল খেলোয়াড়। সবাইকেই আমাদের দরকার। সে ভারতীয় হোক বা বিদেশি।”