স্থানীয়

বুড়াপীরের মাজারে সম্প্রীতির নজির

এনএফবি,দক্ষিণ দিনাজপুরঃ

১৭০৭ সালে সুলতানি রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে মাত্র ১৮ জন যোদ্ধাকে নিয়ে বাংলা দখল করেছিলেন দুর্ধর্ষ যোদ্ধা ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজী। কথিত আছে বাংলা দখলের পর ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজী তিব্বত দখলে যান, কিন্তু তিব্বতে গিয়ে তিনি পরাজয়ের মুখোমুখি হন। এর পরে তিনি আবার বাংলায় ফিরে আসেন। কিন্তু তিব্বতে পরাজয়ের গ্লানিতে তার শরীর ভেঙে পড়ে। এবং তার মৃত্যু ঘটে। ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন দেবীকোট এলাকায় বর্তমানে যা নারায়ণপুর পীরপাল নামে পরিচিত সেখানেই তার মৃত্যু ঘটে। এবং ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজী কে নারায়ণপুর পীরপাল এলাকায় সমাধিস্থ করা হয়। ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজী বীর যোদ্ধাও ছিলেন। আর এই যোদ্ধার মৃত্যু ঘটলে কালের নিয়মে এই যোদ্ধা স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাসে পীরের মর্যাদা পান। স্থানীয় বাসিন্দাদের বুড়াপীর হিসাবে মর্যাদা পান। আর এই পীরের মাজার ঘিরেই স্থানীয় হিন্দু-মুসলিম সকল ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। সেইমতো প্রতি বছর বৈশাখ মাসের প্রতি বৃহস্পতিবার এই মাজার ঘিরে বসে পুজো। পুজো ঘিরে মেলা। সেইমতো প্রতিবারের ন্যায় এবারেও অনুষ্ঠিত হলো পীরপালের ঐতিহ্যবাহী ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজীর পুজো ও মেলা।বৃহস্পতিবার পুজো ও মেলাকে ঘিরে এলাকায় দেখা দিয়েছে সম্প্রীতির নজির। এদিন মেলার পাশাপাশি যাত্রাগানের আয়োজন করা হয়।

নিজস্ব চিত্র

উল্লেখ্য গঙ্গারামপুর ব্লকের ৩/২ বেলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের নারায়ণপুর পীরপালে অবস্থিত ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজীর মাজার।প্রতিবছর বৈশাখ মাসের প্রতি বৃহস্পতিবার বখতিয়ার খিলজির মাজারের ফুল,বেলপাতা,দুধ,মুড়কি ও ঘোড়া দিয়ে পুজো দিয়ে থাকেন হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন। মজার বিষয় যে এই মুসলিম পীর কে সারা বছর পুজো দেন স্থানীয় হিন্দু পরিবারগুলিই। প্রতিবছর এই পীরের পুজো ঘিরে বৈশাখ মাসের প্রতি বৃহস্পতিবার জমে ওঠে মেলা। গতকাল ছিল বৈশাখ মাসের তৃতীয় বৃহস্পতিবার। তাই এদিন সকাল থেকে মাজারে পুজো দেন ভক্তরা। পাশাপাশি বসে মেলা।সেইসঙ্গে যাত্রা গানের আয়োজন করা হয়।