অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ
শনিবার ডার্বিতে শোচনীয় হারের পরে এসসি ইস্টবেঙ্গলের সামনে এখন ঘুরে দাঁড়ানোর কঠিন চ্যালেঞ্জ। অথচ গত ম্যাচ ও পরবর্তী ম্যাচের মধ্যে রয়েছে মাত্র দু’দিন। এত কম সময়ে দলকে হারের হতাশা থেকে বার করে এনে জয়ের রাস্তায় ফেরানো বেশ কঠিন কাজ। এই কারণেই লাল-হলুদ বাহিনীর প্রধান কোচ হোসে মানুয়াল দিয়াজের চ্যালেঞ্জটা আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। কী ভাবে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করবেন তিনি। রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে একাধিক তরতাজা ফুটবলারকে প্রথম দলে এনে? সে রকমই ইঙ্গিত পাওয়া গেল তাঁর কথায়। ম্যাচের আগে সাংবাদিকদের কী বললেন তিনি? জেনে নেওয়া যাক।
স্প্যানিশ ফুটবলে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য একটি মন্ত্র ব্যবহার করা হয় ‘রেমন্তাদা’। আপনার দলকে কি সেই মন্ত্র দেবেন?
ওড়িশা আর পাঁচটা প্রতিপক্ষের মতোই। যে মন্ত্রের কথা বলছেন, ‘রেমন্তাদা’, সেই মন্ত্র হারতে থাকা একটা দলকে জয়ে ফেরানোর জন্য বলা হয়। ওড়িশা এখানে আমাদের আরও এক প্রতিপক্ষ। এই ম্যাচটা আমাদের পক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট তুলতেই হবে।
বেঙ্গালুরুর মতো দলকে হারিয়ে আপনার দলের বিরুদ্ধে নামবে ওড়িশা। ডার্বিতে শোচনীয় হারের পরে এরকম একটা শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে জয়ের রাস্তায় ফেরা কি সহজ হবে?
আমরা পরের ম্যাচে যথেষ্ট ‘ফোকাসড’ আছি। ওড়িশা কেমন দল, সেটা নিয়ে যতটা না ভাবছি, তার চেয়ে বেশি মন দিচ্ছি গত ম্যাচে ওড়িশা কী ভাবে জিতেছে, তা নিয়ে।
অরিন্দম ভট্টাচার্যের চোটের অবস্থা কী? পরের ম্যাচে কি শুভম সেনই গোল সামলাবেন?
শুভমই সম্ভবত পরের ম্যাচে দায়িত্বে থাকবে। অরিন্দমের চোটের অবস্থা কী, তা নজরে রাখা হচ্ছে।
গত দুই ম্যাচে আপনার দলের আক্রমণে তেমন সৃষ্টিশীল ফরোয়ার্ডকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই ম্যাচে কি কোনও ভারতীয় স্ট্রাইকারকে সুযোগ দেবেন?
আমাদের স্ট্রাইকাররা গোল করার যথেষ্ট সুযোগ পায়নি। কারণ, আমাদের পুরো দলটাই ভাল খেলতে পারেনি। সেই কারণেই ওরাও গোলের সুযোগ পায়নি। তবে প্রথম ম্যাচে ওরা অতটা খারাপ খেলেনি। আমরা ম্যাচটাতে জিততে পারতাম। আমাদের দলে ভারতীয় স্ট্রাইকার রয়েছে, থঙখোসিম সেম্বয় হাওকিপ। বলওয়ন্তের চোট রয়েছে। এই ম্যাচে সেম্বয়কে আমরা অবশ্যই সুযোগ দেব।
ডার্বিতে আদিল খান দ্বিতীয়ার্ধে নেমে ভাল খেলেছে। ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে কি টমিস্লাভ মর্সেলার জায়গায় ওঁকে প্রথম একাদশে রাখার কথা ভেবেছেন?
সব কিছুই সম্ভব। আমাদের দলটা বাছাই করেছেন আমাদের ক্লাবের কর্তারা, টেকনিকাল স্টাফ নয়। সেরা কম্বিনেশন তৈরির জন্য এই দলের প্রত্যেকেই মাঠে নামার সুযোগ দেওয়া হবে।
ডার্বির শোচনীয় হারের পরে দলটাকে নতুন করে গোছাবেন কী ভাবে?
দলে পরিবর্তন অবশ্যই করতে হবে। কারণ, রিকভারির জন্য আমরা মাত্র দু’দিন সময় পেয়েছি। দেখা যাক কী ভাবে দলটা সাজাই। প্রথম ম্যাচে আমরা যতটুকু ভাল খেলেছিলাম, সেই খেলাটাকেই আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। দ্বিতীয় ম্যাচে যে ভুলগুলো করেছি, সেগুলো আর করলে চলবে না।
শিবিরের অবস্থা কী? কী ভাবে দলের ছেলেদের চাঙ্গা করার চেষ্টা করছেন?
হারের দু’ দিনের মধ্যে আর একটা ম্যাচ, নতুন চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে। দলের প্রত্যেক খেলোয়াড় ও টেকনিকাল স্টাফ দলের পারফরম্যান্সে উন্নতির চেষ্টা করছে, যাতে এ বার ফল ভাল হয়।
এসসি ইস্টবেঙ্গল ঝাঁপাবে, ধারনা ওড়িশা কোচের
অন্য দিকে, ওড়িশা এফসি-র স্প্যানিশ কোচ কিকো রামিরেজ এসসি ইস্টবেঙ্গলকে মোটেই হাল্কাভাবে নিচ্ছেন না। তাঁর ধারণা, প্রথম দুই ম্যাচে জয়ের মুখ দেখতে না পাওয়ায় মানুয়েল দিয়াজের দল এই ম্যাচে জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠবেই। তাই এই ম্যাচটা ওডিশার কাছে কঠিন হবে বলেই মনে করছেন তিনি। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি যা বললেন, তা কিছু অংশ তুলে দেওয়া হল।
জয় দিয়ে লিগ শুরু প্রসঙ্গে
আগের ম্যাচে কী হয়েছে ভেবে লাভ নেই। আমি বর্তমান নিয়ে থাকতে ভালবাসি। ভবিষ্যতের কথাও ভাবি। এখন আমার ভাবনায় একটাই জিনিস রয়েছে, পরের ম্যাচে কী ভাবে যথাসম্ভব ভাল পারফরম্যান্স দেওয়া যায়।
হাভিয়ে হার্নান্ডেজের পারফরম্যান্স…
হাভিয়ে হার্নান্ডেজ খুবই ভাল খেলোয়াড়। গত ম্যাচে দু-দুটো গোল করেছে। কিন্তু সতীর্থদের সাহায্য ছাড়া ও এত ভাল খেলতে পারত বলে মনে হয় না। ফুটবল দলগত খেলা। সতীর্থদের সাহায্য ছাড়া কেউ ভাল কিছু করতে পারে না।
প্রতিপক্ষ এসসি ইস্টবেঙ্গল
প্রথম দুটো ম্যাচে ওরা জিততে পারেনি। তাই এই ম্যাচে ওরা জেতার জন্য ঝাঁপাবেই। তাই আমাদের পক্ষে ম্যাচটা কঠিন হতে চলেছে।
বিদেশিদের রোটেশন
সব খেলোয়াড়কেই মানসিক ও শারীরিক ভাবে চাঙ্গা রাখতে হবে। এই কাজটা করে থাকে আমাদের সাপোর্ট স্টাফ। লিগটা যেহেতু বেশি দিনের নয়, তাই প্রত্যেককে তৈরি রাখা খুব কঠিন। তবে আমাদের সবাইকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলে সেটা করে যেতে হবে।
গোলকিপার কমলজিৎ সিং-এর চোট
দলের সবাই সুস্থ রয়েছে। কারও চোট নেই। গত ম্যাচে কমলজিৎ আঘাত পেয়েছিল ঠিকই। কিন্তু এখন ও ফিট হয়ে গিয়েছে।