অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ
বিরাট কোহলি ও ঋষভ পন্থের জোড়া অর্ধশতরানই এদিন ম্যাচটা ভারতের পক্ষে এনে দিয়েছিল। যদিও একের পর এক ক্যাচ মিস এবং পাওয়েল -পুরাণের পার্টনারশিপ ম্যাচটা কঠিন করে দিয়েছিল। যদিও শেষরক্ষা করতে পারেনি তারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ লড়াইটা শেষ পর্যন্ত চালালেও হার মানতেই হল তাদের। ইডেন গার্ডেন্সে দ্বিতীয় ম্যাচ জেতার সঙ্গেই টি টোয়েন্টি সিরিজও নিজেদের পকেটে পুরে ফেললেন রোহিত শর্মারা। ক্যারিবিয়ান ব্রিগেডকে ৮ রানে হারাল টিম ইন্ডিয়া। সেইসঙ্গে ঐতিহ্যের ইডেন গার্ডেন্সে শততম টি টোয়েন্টি ম্যাচও জিতে নিল ভারত।
একদিনের সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইট ওয়াশ করেছিল ভারত। টি টোয়েন্টিতেও লক্ষ্যটা একই। আর সেই লক্ষ্যে ইডেনে দ্বিতীয় টি টোয়েন্টি ম্যাচ জিততেই হত ভারতকে। ব্যাটারদের হাত ধরে দ্বিতীয় ম্যাচে সেই কাজটা ভাল ভাবেই করতে পারল টিম ইন্ডিয়া। রভম্যান পাওয়েল এবং নিকোলাস পুরাণ লড়াইটা করলেও, ভারতের হিসাবী বোলিং তাদের রুখে দিতে এদিন সমর্থ হয়েছিল ইডেন গার্ডেন্সের এই পিচে জিততে হলে ভারতের লক্ষ্য ছিল ১৭৫ রান। সেই লক্ষ্য মাথায় নিয়েই এদিন নেমেছিলেন রোহিত শর্মারা। কিন্তু ওপেনিংয়ে শুরুটা একেবারেই ভাল করতে পারেনি ভারত। শুরুতেই ২ রানে সাজঘরে ফেরেন ইশান কিষাণ। কিছুক্ষণের মধ্যেই প্যাভিলিয়নের রাস্তা ধরেন রোহিত শর্মাও। ক্রিজে অবশ্য তখন ছিলেন বিরাট কোহলি। এদিন মাঠে আসার পর থেকেই বেশ ছন্দে ছিলেন তিনি। শুরু থেকেই একের পর এক বাউন্ডারি মারতে থাকেন বিরাট। এদিন তাঁকে সঙ্গত দিতে পারেননি সূর্যকুমার যাদব। তিনিও ফিরে যান মাত্র ৮ রানে। যদিও লড়াইটা একাই চালিয়ে যান বিরাট কোহলি। ৪১ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলে অবশ্য থামতে হয় তাঁকেও। তখন ভারতের রান ৪ উইকেটে ১০৬। প্রথম ম্যাচে না পারলেও, এদিন ইডেন গার্ডেন্সে জ্বলে ওঠেন ঋষভ পন্থ। তাঁর হাত ধরেই ফের ভারতের বড় রানের পথে এগোনোর আসা জাগে। এদিনও ভাল খেলেছেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। তবে ঋষভের ঝোরো ইনিংসের সৌজন্যেই ভারত ১৮০ রানের গন্ডী টপকাতে পারে।
২৮ বলে ৫২ রানের ঝোরো ইনিংস খেলেন ঋষভ পন্থ। সেইসঙ্গে ১৮ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। ৫ উইকেট খুইয়ে ভারত করে ১৮৬ রান। হাতে বড় রান। এবার পরীক্ষাটা ছিল বোলারদের সামনে। প্রথম দিন বোলাররা পারলেও, এদিন কিন্তু সেই পারফরম্যান্স দেখাতে পারেননি ভারতীয় বোলাররা। শুরুর দিকে পেসাররা সেভাবে সফল হতে পারেনি। এদিনও ভারতকে প্রথম উইকেট দেন যুজবেন্দ্র চাহাল। ৩৪ রানের মাথায় ফিরে যান কাইল মেয়ার্স। দ্বিতীয় উইকেটও নেন আরেক স্পিনার রবি বিষ্ণোই। ৫৯ রানে দু উইকেট খোয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেখান থেকেই পার্টনারশিপ গড়ার কাজটা শুরু করেন নিকোলাস পুরাণ এবং রভম্যান পাওয়েল। যদিও তারা যে সুযোগ দেননি তা নয়, কিন্তু এদিনের ম্যাচে একের পর এক ক্যাচ মিস করে ম্যাচটা ক্রমশই কঠিন করে ফেলেছিল ভারত।
দুই ক্যারিবিয়ান তারকাই এদিন অর্ধশতরান করেন। একসময় মনে হচ্ছিল ম্যাচটা হয়ত ভারতের হাত থেকে বেড়িয়েই গিয়েছে। তখনই ১৯ নম্বর ওভারে ম্যাচের মোড় ঘোরে। ভুবনেশ্বর কুমারের বলে সাজঘরে ফেরেন নিকোলাস পুরাণ। তিনি করেন ৬২। এরপরই ক্রিজে আসেন পোলার্ড। ম্যাচ গড়ায় শেষ ওভার পর্যন্ত।
সেখানেই তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের জিততে দরকার ছিল ২৫ রান। বোলিংয়ে তখন হার্শাল পটেল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখন মরিয়া। রভম্যান পাওয়েলের পরপর দু বলে ছয় ফের যেন চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল ভারতকে। তবে শেষ পর্যন্ত আর পারেনি তারা। নির্ধারিত ওভারে ১৭৮ রানেই থামতে হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। ৮ রানে ম্যাচ জেতার সঙ্গেই সিরিজও এখন টিম ইন্ডিয়ার। একইসঙ্গে ঐতিহ্যের ইডেন গার্ডেন্সে শততম টি টোয়েন্টিও জিতল টিম ইন্ডিয়া। রবিবার লড়াই হোয়াইট ওয়াশের।