দেশলেটেস্ট

প্রয়াত লতা মঙ্গেশকর (১৯২৯-২০২২)

এনএফবি, নিউজ ডেস্কঃ

প্রায় চার সপ্তাহের লড়াই শেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। রবিবার সকাল ৮ টা ১২ মিনিট নাগাদ মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যু কালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। কিংবদন্তি সংগীতশিল্পীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন এন সান্থানামাও।

৮ জানুয়ারি থেকে মুম্বইয়ের এই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন লতা। প্রথমে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। একসময় কোভিড নেগেটিভ হলেও পরে নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছিলেন। সম্প্রতি প্রবাদপ্রতিম গায়িকার শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ভেন্টিলেশন সাপোর্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আশার আলো দেখছিলেন চিকিৎসকরাও। তবে শনিবার ফের আবার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হতে শুরু হয়। এ দিন দুপুরে চিকিৎসকরা জানান, গায়িকার শারীরিক অবস্থা সংকটজনক। খবর ছড়িয়ে পড়তেই দেশ জুড়ে আরোগ্য কামনা করেন অনুরাগীরা। এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় দিদি লতাকে দেখতে হাসপাতালে আসেন আশা ভোঁসলে। তখন থেকেই ছড়িয়ে পড়ে উৎকন্ঠা। ভক্তদের আরোগ্য কামনা চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে বিদায় নেন কিংবদন্তি গায়িকা।

সাত দশক ধরে ভারতীয় সংগীতের এই জীবন্ত কিংবদন্তি ১৯২৯ সালে ইন্দোরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। কাঁটাতারের সীমানা ছাড়িয়ে লতার সুরেলা কন্ঠ ছড়িয়ে পড়েছিল বিশ্বের দরবারে।

প্রয়াত এই সংগীত শিল্পী ১৯৪২ সালে মারাঠি গান গেয়ে তাঁর কেরিয়ারের সূচনা করেছিলেন। ১৯৪৬ সালে তিনি প্রথম হিন্দি সিনেমার জন্য গান করেন। বসন্ত জোগলেকরের ‘ আপ কি সেবা মে’ ছবিতে তিনি ‘ পা লাগু কার জোরি’ গানটি গেয়েছিলেন। দুই বছর পর সুরকার গুলাম হায়দারের তাঁকে প্রথম বড় সুযোগ দেন।
‘মজবুর’ ছবিতে ‘দিন মেরা তোরা’ গানটির পর লতাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।

সংগীতের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গান রেকর্ডের ইতিহাস আশা ভোঁসলের। তিনি গেয়েছেন প্রায় ১০ হাজার গান। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে এ রেকর্ডটি ছোট বোন আশার হওয়ার আগে ছিল লতা মঙ্গেশকরের। লতা গেয়েছেন প্রায় সাড়ে সাত হাজার গান। লতা মঙ্গেশকর প্রায় ৩৬টি ভাষায় গান করেছেন। এর মধ্যে আছে বাংলাও। ‘প্রেম একবার এসেছিল নীরবে’ , ‘আষাঢ় শ্রাবণ মানে না তো মন’, ‘ও মোর ময়না গো’, ‘ও পলাশ ও শিমুল’, ‘আকাশপ্রদীপ জ্বেলে’-সহ আরও অনেক বিখ্যাত বাংলা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি।

২০০১ সালে লতা মঙ্গেশকর সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান ভারতরত্ন পান। ১৯৮৯ সালে তিনি দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার লাভ করেন।

আরও পড়ুনঃ অসময়ে বৃষ্টি, নষ্টের পথে আলু – ভুট্টা চাষ