এনএফবি, বালুরঘাটঃ
নাটকের শহর বালুরঘাটে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হওয়া নাট্য উৎকর্ষ কেন্দ্র উদ্বোধনের পরেও তা সঠিক কাজে লাগাতে পারেনি রাজ্য সরকার। এদিকে ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে তড়িঘড়ি উদ্বোধন করা হলেও তা চালু না হওয়ার ফলে দামি দামি আধুনিক যন্ত্রপাতি ও অনান্য দামি জিনিসপত্র পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে গিয়েছে ।
অন্যদিকে শহরে এই রকম আধুনিক মানের নাট্য চর্চা ও উৎকর্ষ কেন্দ্র থাকতেও অনেক নাটকের দল তাদের নাটক পরিবেশন করতে পারছে না এই নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে নাট্যকর্মীদের মধ্যে।অত্যাধুনিক মানের নাট্য উৎকর্ষ কেন্দ্র থাকবার পরেও কেন নাট্যকর্মীরা নাটক করতে পারেন না সেই প্রশ্নই বার বার উঠে আসছে। তাই উদ্বোধনের পর কোন নাটক চর্চা না হওয়ায় তা আজ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কোভিড সেন্টারে রূপান্তরিত করা হয়েছে ৷
প্রায় ১২ কোটি ৭৭ লাখ টাকায় বালুরঘাটের চকবাখর এলাকায় নাট্য উৎকর্ষ কেন্দ্রটি তৈরি করে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সময় দু’একর জায়গার উপর প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়।উৎকর্ষ কেন্দ্রে নাটক, লোকসংস্কৃতি আর্কাইভ, উত্তরবঙ্গের নাটকের দলগুলোর নিয়মিত পরিচর্যা, গ্রন্থাগার, নাটক নিয়ে আলোচনা, গবেষণা সবই এক ছাদের তলায় সম্ভব হবে। সেই ভাবনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাগ্রহে এই প্রকল্পের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। নাট্য উৎকর্ষ কেন্দ্রে নাটক মঞ্চায়ন, চর্চা ছাড়াও নাটকের নির্মাণ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা যাবে বলে জানিয়েছিলেন সেইসময়ের বালুরঘাটের সাংসদ তথা নাট্য ব্যক্তিত্ব অর্পিতা ঘোষ।কিন্তু নাটক তো দূর এখন দেখলে মনে হবে ঝোপ ঝাড়ের আড়ালে একটি আস্ত ভুতুড়ে বাড়ি। এমনিতেই কোভিড হাসপাতাল হওয়ার ফলে এখন সেখানে আর বহু মানুষের সমাগমে নাট্য চর্চার কোন বিষয়ে কেউ পা রাখার সাহস দেখাবে কিনা সে নিয়েও অনেক নাট্যকর্মীদের মনে সন্দেহ আছে। তাদের আরও আশঙ্কা একেই নাট্য চর্চা কেন্দ্রটি গড়ে তোলার জন্য জায়গা নির্বাচন সঠিক জায়গায় করা হয়নি। তার উপর কোভিড হাসপাতাল থাকায় অনেকেই তা এড়িয়ে চলবে।তাই উদ্বোধনের পর থেকেই যেমন কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বালুরঘাটের নাট্য উৎকর্ষ কেন্দ্রটি তালাবন্দি অবস্থায় রয়েছে ৷ মিরাকেল কিছু ঘটলে হয়তো আস্তে আস্তে সাপখোপের আস্তানাতেই পরিণত হবে এই নাট্য উৎকর্ষ কেন্দ্রটি ।