ক্রীড়া

অবসর শ্রীসন্থের

অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ

৩৯ বছর বয়সে এসে সব ধরনের ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন ভারতীয় পেস বোলার শান্তা কুমার শ্রীসন্থ। দীর্ঘদিনের নির্বাসন কাটিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটের আঙিনায় ফিরে আসেন কিছুদিন আগে। রঞ্জি ট্রফিতে মেঘালয়ের মুখোমুখি হয় শ্রীসন্থর কেরালা । সেখানেই প্রথম ইনিংসে ৪০ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন শ্রীসন্থ। প্রথম উইকেট নেওয়ার পরে দেখা যায় পিচের মধ্যে শুয়ে পড়ে প্রণাম করছেন তিনি। তাঁকে শুভেচ্ছা জানান দলের বাকি ক্রিকেটাররা। তিনি তারপর সোশ্যাল মিডিয়াতে লেখেন, “৯ বছর পরে আমার প্রথম উইকেট। ভগবানের আশীর্বাদে সব হয়েছে। তাই আমি উইকেটকে প্রণাম করেছি।” ঘরোয়া ক্রিকেটে ২১৩ উইকেট নিয়েছেন এই বোলার। গত আইপিএলের নিলামে তার নাম থাকলেও কেউ নেয়নি এই পেস বোলারকে। এদিন অবসর নেওয়ার পরে সোশ্যাল মিডিয়াতে তিনি জানান,”আগামী প্রজন্মের ক্রিকেটারদের জন্য আমি আমার প্রথম শ্রেণির কেরিয়ারে ইতি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা আমার একার নেওয়া সিদ্ধান্ত। জানি এই সিদ্ধান্ত আমার জন্য আনন্দধারা বয়ে আনবে না। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেওয়ার একেবারে সঠিক সময় এটাই।” ২০১৩ সালে আইপিএল-এ ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগ ওঠে শ্রীসন্থের বিরুদ্ধে। প্রথমে ক্রিকেট থেকে আজীবন নির্বাসন দেওয়া হয় তাঁকে। পরে তা কমিয়ে সাত বছর করা হয়। ২০১৫ সালে তিনি স্পট ফিক্সিং কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হন। তার আগে বোর্ড তাঁকে গড়াপেটা কাণ্ডের দায়ে আজীবন নির্বাসন করে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর ২০২০ সালে শ্রীসন্থের ওপর নির্বাসন তুলে নেয় বিসিসিআই। এরপর শ্রীসন্থ দাবি করেছিলেন, তিনি ফের জাতীয় দলের হয়ে খেলবেন। ২০১৬ সালে কেরালা বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র টিকিটে ভোটে দাঁড়িয়ে হেরেছিলেন তিনি। বিগ বস-১২ থেকে ঝলক দিখলা ঝা-তে পারফমও করে বিনোদন দুনিয়ায় পা-ও দিয়েছিলেন। মাঠে স্লেজিং করা নিয়ে বারবার বিতর্কতেও জড়ান। ২০০৬ সালে জোহানেসবার্গ টেস্টে আন্দ্রে নেলকে ছয় মেরে মাঠে অদ্ভুত ভঙ্গিতে নাচেন ।২০০৫ সালে নাগপুরে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ওয়ানডে-তে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল তাঁর।ভারতের হয়ে ২৭ টেস্ট, ৫৩ এক দিনের ম্যাচ ও ১০টি টি২০ খেলেছেন শ্রীসন্থ। শেষ বার ২০১১ সালের আগস্ট মাসে ভারতের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন তিনি। ২০০৭ ও ২০১১ সালে ভারতের দু’টি বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন তিনি।২০০৭ সালের টি-২০ বিশ্বকাপ ফাইনালে মিসবা উল হকের ক্যাচ ধরেছিলেন শ্রীসন্থ। তাঁর নেওয়া সেই ক্যাচ ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীদের মনে অমলিন হয়েই থাকবে।