অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ
২০০১ ইডেন টেস্ট ভারতীয় ক্রিকেট তথা বিশ্ব ক্রিকেটের মাইলস্টোন। চাইলেও কোনো ক্রিকেট প্রেমী ভুলতে পারবে না এই টেস্টকে। স্টিভ ওয়ার অস্বমেধের ঘোড়া আটকে দিয়েছিলো সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের টিম ইন্ডিয়া। ফলোওন খেয়েও রাহুল দ্রাবিড় ও ভিভি এস লক্ষণ এর ব্যাটের উপর ভর করে সেই টেস্ট ম্যাচ জিতে যায় ভারত। লক্ষণ সেই টেস্টে করেন ২৮১ আর দ্রাবিড় করেন ১৮০। আর বল হাতে হরভজন সিংয়ের হ্যাটট্রিক আর এরপরে বল হাতে সচিন তেন্ডুলকারের ম্যাজিক, সবমিলিয়ে সেই টেস্ট ম্যাচে ভারতের জয় এক ক্রিকেট রূপকথা। তবে এই জয়ে আর একজনের ভূমিকা অস্বীকার করা যাবে না তিনি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাবা চন্ডি গঙ্গোপাধ্যায়। সৌরভ নিজেই জানালেন সেই কথা। একটি বেসরকারি চ্যানেলের রিয়েলিটি শো-তে উপস্থাপকের ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় বিসিসিআই সভাপতিকে। সেখানেই কথাপ্রসঙ্গে তিনি জানান, পঞ্চম দিন ভারত ব্যাট করছিল। তখন লিড ৩৫০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। তবু ডিক্লেয়ার করেছিলেন না ভারত অধিনায়ক সৌরভ।
এমন সময় বাবা চণ্ডী গঙ্গোপাধ্যায়ের থেকে একটি চিঠি পান সৌরভ। চণ্ডী গঙ্গোপাধ্যায় যেহেতু সি এ বি র প্রাক্তন সচিব ছিলেন। তাই ইডেন গার্ডেন্স তথা সিএবিতে যথেষ্টই প্রতিপত্তি। এই মুহূর্তে তিনি ক্লাব হাউজের দোতলায় উপস্থিত। সেখান থেকেই একতলায় ভারতীয় ড্রেসিংরুমে ছেলেকে চিঠিটি পাঠিয়েছেন । সৌরভ চিঠি খুলে দেখেন তাতে লেখা, “ওপরে অনেক ক্রিটিসিজম হচ্ছে। এবারে ডিক্লেয়ার করো।”
ব্যস্, বাবার আদেশ পেয়েই নড়েচড়ে বসেন সৌরভ। দুই ওভার পরেই ইনিংস ডিক্লেয়ার করেন তিনি। এরপরের টুকু সকলেরই জানা। হরভজন আর সচিনের ভেলকিতে পঞ্চম দিন দুটো পুরোপুরি সেশন-ও টিকতে পারে না স্টিভ ওয়’র দল । ফলে ১৭১ রানের এক ঐতিহাসিক জয় ছিনিয়ে নেয় ভারত। সৌরভের বাবা এরপরে তাকে বলেন, ” দেখলে তো আমার কথা শুনে ফল পেলে।” পরের চেন্নাই টেস্টেও ভারত জিতে, স্টিভ ওয়ার ভারত থেকে সিরিজ জেতার স্বপ্ন সফল হতে দেননি। সৌরভের ক্রিকেটার হওয়ার পেছনে তার বাবার ভূমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই। তিনি প্রায়ই বলতেন তার ছোট ছেলে কাঁপাবে। তবে ২০১৩ সালে প্রয়াত হন সৌরভের বাবা চন্ডি গঙ্গোপাধ্যায়।