পুজোর আগে ছানার মূল্য প্রায় দ্বিগুণ করে দেওয়ায় গভীর সংকটে মিষ্টি ব্যবসায়ীরা

এনএফবি,পশ্চিম মেদিনীপুরঃ

এবার পুজোর সময় ছানার মিষ্টি তৈরি না হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে মেদিনীপুরে । কারণ ছানার দাম অবৈধভাবে দ্বিগুণ করতে চাইছেন ছানা ব্যাবসায়ীরা। আর তাতেই ছানার মিষ্টি তৈরি থেকে বিরত থাকতে চাইছেন মেদিনীপুরের মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী মহল ।

অনেকেই জানে যে, মেদিনীপুরে নানা লোভনীয় সুস্বাদু মিষ্টি পাওয়া যায়। সেই মিষ্টির দাম সাধারণত প্রতি পিস ৫ টাকা থেকে ১২ এবং ১৫ টাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে । যেখানে জঙ্গলমহল অধ্যুষিত মেদিনীপুরের খেটে খাওয়া গরিব মানুষেরাও এই ছানার মিষ্টি এবং তার সঙ্গে দই সংগ্রহ করতে পারেন। কিন্তু সম্প্রতি মেদিনীপুরের মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদের কে দেওয়া ছানার ব্যবসায়ীরা ছানার দামের সঙ্গে দুধের দাম বাড়াতে চলেছেন প্রায় দ্বিগুণ আর তাতে ক্ষোভের সঞ্চয় হয়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে।কারণ তারা ছানার দাম ইতিমধ্যে কেজিতে ১৮২ টাকার পরিবর্তে ২৬০ টাকা দবি করছে , সেখানে দুধের দাম ৪৯ টাকা থেকে বাড়াতে চেয়েছেন ৬৫ টাকাতে। আর তাতেই বেঁকে বসেন মেদিনীপুরের মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা। কারণ একেই জিনিসপত্রের দাম আগুন ,সেখানে যতটা পরিমাণে কম করা যায় সেই পরিমাণের দাম নির্ধারণ করেই তারা মিষ্টি এতোদিন ধরে ক্রেতাদের দিয়ে চলেছেন। কিন্তু এইভাবে যদি দ্বিগুণ হারে দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে পাঁচ টাকা মিষ্টির মূল্য নির্ধারণ করতে হবে ১৫ টাকা অথবা ২০ টাকাতে। তাতেও হয়তো আর ছানার মিষ্টি দেওয়া যাবে না জঙ্গলমহলের মানুষকে।আর এরফলে পুজোর সময় সমস্যায় পড়বে সাধারণ মানুষজন। কারণ সামনেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পুজো এবং দুর্গাপুজোর হাত ধরেই লক্ষ্মী,জগদ্ধাত্রী এবং শেষ পর্যন্ত সরস্বতী পুজোতে শেষ হবে পুজোর মরশুম। আর প্রতি পুজোতেই মিষ্টি এক অপরিহার্য উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।কিন্তু বর্তমানে মেদিনীপুরের মিষ্টির দোকান গুলো থেকে উধাও হতে যেতে বসেছে এই ছানা দিয়ে তৈরি রসগোল্লা,রাজভোগ,পান্তুয়া,চমচম ,রসমালাই প্রভৃতি।

নিজস্ব চিত্র

স্থানীয় মিষ্টি ব্যবসায়ীদের দাবি অনেকবারই তারা ছানা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চেয়েছেন কিন্তু তারা তাদের দাবিতে অনড় রয়েছেন । যার ফলে সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে তাদের। এই দিন মেদিনীপুরের মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী গণেশ চন্দ্র মাইতি ও শশধর রায় বলেন গত ২১ সালের নভেম্বর মাস থেকে ছানার দাম বাড়ানো হয়েছে প্রায় চার টাকারও বেশি। কিন্তু তারপর আবার ২০২২ শে এই সেপ্টেম্বর মাসেই দাম বাড়ানো কোনো পক্ষেই সম্ভব নয়। তাই আমরা ছানার মিষ্টির বদলে বেসন,ময়দা ও গুড়ের মিষ্টি বিক্রি করছি। ফলস্বরূপ লস যেমন হচ্ছে তার সঙ্গে ক্রেতাদের ক্ষোভ বাড়ছে। যদিও এই বিষয়ে মেদিনীপুর মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীর সম্পাদক সুকুমার দে বলেন, গত ২০২১ সালেই ছানার দাম বাড়ানো হয়েছে। তারপর এই বর্ধিত হারে ওরা যদি ছানার দাম দাবি করে তা কোন মতে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। যেখানে খোদ কলকাতাতে মিষ্টির দাম বাড়ছেনা এবং ছানা একই দামে পাওয়া যাচ্ছে সেখানে জঙ্গলমহল অধ্যুষিত মেদিনীপুরে এত দাম কেন? বারবার আলোচনায় বসার চেষ্টা করা হলেও কিছুতেই তারা দাবি মানছে না বলে তিনি জানান। তিনি এও দাবি করেন জঙ্গলমহল মেদিনীপুর কখনো পশ্চিমবাংলার বাইরে নয় তাহলে ছানার দাম এত বাড়ছে কেন ?