এনএফবি, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ
মাফিয়ারাজ! খোদ পুর চেয়ারম্যানের এলাকাতেই জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য। রাতারাতি বদলাচ্ছে জমির চরিত্র। দিনের আলোতে অবাধে চলছে পুকুর ও খাঁড়ি ভরাটের কাজ। উদাসীন পুরসভার ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে মহকুমা প্রশাসনের দ্বারস্থ স্থানীয় বাসিন্দারা।চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি বালুরঘাট শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণ পল্লী এলাকার।
ঘটনা নিয়ে চেয়ারম্যানকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন বিরোধীরা।
বালুরঘাট শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণপল্লী এলাকা দিয়েই বয়ে গিয়েছে বহু প্রাচীন শ্রীমন্তের খাঁড়ি। যে খাঁড়ির দু’ধার দিয়েই এক সময় গড়ে উঠেছিল বসতি। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খাড়িটি তার গতিপথ হারিয়ে ফেলে। আর এই সুযোগ নিয়েই এলাকায় বহুদিন থেকেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জমি মাফিয়ারা।
রাতারাতি জমির চরিত্র বদল করে অনেকেই এলাকায় গড়ে তুলেছেন বড় বড় ইমারত। মাফিয়া রাজের দৌরাত্ম্যে বর্তমানে খাঁড়িটি যেন কিছুটা ডোবায় পরিনত হয়েছে। যেখানেই জমছে বর্ষার জল।
শুধু তাই নয়, আজও এলাকার মানুষের নোংরা আবর্জনা ও ড্রেনের যাবতীয় জল এসে জমা হচ্ছে সেই খাঁড়িতে। এবারে অবশিষ্ট সেই খাঁড়ির জায়গার উপর শ্যোন দৃষ্টি পড়েছে জমি মাফিয়া ও স্থানীয় কিছু তৃণমূল নেতাদের বলে অভিযোগ। যাদের দৌরাত্ম্যে দিনের আলোতে অবাধে ভরাট হচ্ছে শ্রীমন্তের খাঁড়ি। যা নিয়ে ইতিমধ্যে মহকুমাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
তাদের দাবি জলাশয় ভরাট কোনভাবেই বরদাস্ত নয়। অবিলম্বে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে বন্ধ হোক খাঁড়ি ভরাটের কাজ। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পুর চেয়ারম্যানকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন বিরোধীরা।
তাদের অভিযোগ, খোদ চেয়ারম্যানের নিজের এলাকায় কিভাবে দিনের আলোতে এমন অবৈধ ভরাট চলছে? যা দেখবার পরেও কেন নিশ্চুপ রয়েছেন তিনি? সে প্রশ্ন তুলেও সরব হয়েছেন বিরোধীরা। যদিও এই ঘটনাকে তেমন গুরুত্ব দিতে চাননি পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র।
চেয়ারম্যান অশোক মিত্র বলেন, এব্যাপারে কোন অভিযোগ এখনও তিনি পাননি। অভিযোগ পেলে সেই জমিটি ডোবা না বাস্তু তা খতিয়ে দেখা হবে।
এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলর প্রলয় ঘোষ বলেন, এই ওয়ার্ডের জল যাবার অন্যতম জায়গা এই শ্রীমন্তের খাঁড়ি। পরিকল্পনা মাফিক ভরাট চলছে খাঁড়ির জায়গা এবং চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনেই চলছে। এসবের সাথে যুক্ত সরকারি ডিপার্টমেন্ট গুলো কেন রয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন বে আইনি বিষয়গুলিই আইনত হয়েছে।
বিজেপি নেতা সুমন বর্মন বলেন, চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনেই অবৈধভাবে খাঁড়ি ভরাটের কাজ চলছে। যা দেখেও তিনি নিশ্চুপ রয়েছেন। অবিলম্বে এসব বন্ধ না হলে তারা লিখিত অভিযোগ জানাতে বাধ্য হবেন এবং রাস্তায় নামবেন।
এলাকার বাসিন্দা মনোজিত দাস ও বাবলি দাসরা বলেন, বহু পুরোনো এই শ্রীমন্তের খাঁড়ি । এলাকার মানুষের নোংরা আবর্জনা ও জল যায়। খাঁড়ির জায়গা কিভাবে রাতারাতি মালিকানাধীন হচ্ছে এবং ভরাট হচ্ছে তা তারাও বুঝে উঠতে পারছেন না। তবে এই খাঁড়ি ভরাট অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত।