স্থানীয়

মাথাভাঙ্গাতে পর পর চুরি,আতঙ্কিত এলাকাবাসী

এনএফবি, কোচবিহারঃ

মাথাভাঙ্গা শহর এবং শহর লাগোয়া অঞ্চলে সিঁদ কেটে সিঁধেল চুরি থেকে শুরু করে মোটর বাইক চুরি বেড়ে যাওয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ এবং উদ্বেগ ছড়িয়েছে মাথাভাঙ্গা জুড়ে। সম্প্রতি মাথাভাঙ্গা শহর লাগোয়া মাথাভাঙ্গা ১ নং ব্লকের পচাগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বেলতলায় একটি বাড়ি থেকে লক্ষাধিক টাকার সোনার গহনা সহ নানা সামগ্রী চুরি করে পালায় দুষ্কৃতীরা। তারপর মাথাভাঙ্গা শহরে ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে চুরি হয়ে যায় শুভঙ্কর সাহার একটি দামি মোটরবাইক। আর সেই চুরির রেশ কাটতে না কাটতেই মাথাভাঙ্গায় ফের চুরির ঘটনা ঘটলো মাথাভাঙ্গা শহরে লাগোয়া মাথাভাঙ্গা কলেজ সংলগ্ন এলাকায় এক স্কুল শিক্ষিকার বাড়িতে।

মাথাভাঙ্গা কলেজ সংলগ্ন এলাকায় জনৈক স্কুল শিক্ষিকার বাড়িতে চুরির ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মাথাভাঙ্গা সহ মাথাভাঙ্গা শহরতলী এলাকায়। মাথাভাঙ্গার বাসিন্দা মেখলিগঞ্জের একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা নিতা ঈশর বর্মনের অভিযোগ, ওই দিন তিনি সকাল ন’টা নাগাদ স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান এরপর তার স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে কাজে বেরিয়ে যাওয়ায় বাড়ি ফাঁকাই ছিল। সেই সুযোগে ফাঁকা বাড়িতে দুষ্কৃতীরা চুরির ঘটনা ঘটায়। শিক্ষিকা নিতা ঈশর বর্মন জানান, বিকেলে স্কুল থেকে ফিরে দেখেন বারান্দার গ্রিল এবং ঘরের দরজা খোলা অবস্থায় রয়েছে। এরপর তিনি ঘরে ঢুকে দেখেন স্টিলের আলমারি ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। তখন এই শিক্ষিকার চক্ষু চড়কগাছ। সেখান থেকে সোনার অলংকারসহ নগদ অর্থ নিয়ে পালিয়ে গেছে দুষ্কৃতকারী চোরেরা। এ ব্যাপারে শিক্ষিকা মাথাভাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানান নিতা দেবী।

জানা গেছে ,এর আগেও মাথাভাঙ্গা শহর লাগোয়া মধ্য বাইশগুড়ি গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মী বাবুল দাসের বাড়িতে প্রকাশ্য দিবালোকে ঘরে ঢুকে ঘরের দরজার তালা ভেঙে আলমারি ভেঙে কয়েক লক্ষ টাকার সোনাদানা সহ বেশকিছু নগদ অর্থ চুরি হয়ে যায়। যদিও পরে পুলিশি তৎপরতায় চুরির ঘটনার সঙ্গে যুক্ত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয় পুলিশ।
সেই সময় পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছে এলাকার বাসিন্দাদের পক্ষে স্থানীয় বাসিন্দা তথা মাথাভাঙ্গা ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির নারী-শিশু সমাজকল্যাণ ও ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষ কল্যাণী রায়। কয়েকদিন আগে মাথাভাঙ্গা শহরে প্রায় কয়েকটি দোকানে শাটার ভেঙে চুরির ঘটনা ঘটে। এবং শহরে থাকা সিসিটিভি গুলোকে উল্টে দেয় দুষ্কৃতকারীরা। একের পর এক মাথাভাঙ্গা শহরে এবং মাথাভাঙ্গা শহরে লাগোয়া এই চুরির ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষ এবং উদ্বেগ প্রকাশ করছেন মাথাভাঙ্গার বাসিন্দারা। তবে বেশ কিছু চুরির ঘটনা পুলিশ কিনারা করলেও দিনের-পর-দিন চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছে পুলিশ।

এব্যাপারে মাথাভাঙ্গা মহাকুমার পুলিশ আধিকারিক সুরজিৎ মন্ডল জানান, প্রত্যেকটি চুরির ঘটনায় পুলিশ তদন্তে রয়েছে। সাধারণ মানুষ বলছে পুলিশ যদি সঠিক তদন্ত করে তাহলে নিশ্চিত ভাবে চুরির কিনারা পুলিশ করবে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। পুলিশের প্রতি আস্থা রয়েছে মাথাভাঙ্গা এবং মাথাভাঙ্গা শহরতলী এলাকার মানুষের। যদিও প্রত্যেকদিন মাথাভাঙ্গা এবং মাথাভাঙ্গা শহরতলী এলাকায় পুলিশি টহল চলছে। আশা করা যায় চুরির ঘটনা গুলো পুলিশ কিনারা করতে পারবে। মাথাভাঙ্গার এলাকাবাসীর একাংশ চাইছে পুলিশের টহলদারি আরো বাড়ানো হোক এবং এই চুরির সঙ্গে কারা যুক্ত রয়েছে তা খুঁজে বের করুক পুলিশ। তবে তদন্তের স্বার্থে এই চুরির কিনারার জন্য কয়েকদিন তো অপেক্ষা করতেই হবে এবং পুলিশকে সাহায্য করতে হবে সাধারণ মানুষকে।