৩৬ বছর পরে বিশ্বকাপের রঙ নীল সাদা, স্বপ্নপূরণ মেসির

অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ

লিওনেল মেসির স্বপ্নপূরণ। অধরা বিশ্বকাপটা নিজের ক্যাবিনেটে নিয়ে নিলেন এল এম টেন। দিয়েগো মারাদোনার সঙ্গে একই আসনে বসলেন। ১৯৮৬-তে দিয়েগো মারাদোনা শেষবার দেশকে বিশ্বকাপ জেতান ৩৬ বছর পর ফের বিশ্বকাপের রঙ নীল সাদা।

সর্বকালের সেরা বিশ্বকাপ ফাইনালের থ্রিলার ম্যাচে ট্রাইবেকারে গতবারের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে হারিয়ে তৃতীয়বার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা।

এদিনের শুরু থেকেই মেসিরা নিজেদের দিকে ম্যাচ রাখে।ম্যাচের ২০ মিনিট পর থেকে ফ্রান্স কিছুটা আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করে। এই সময়টা মাঝমাঠে খেলাটা চলতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে পেনাল্টি পায় আর্জেন্তিনা। ম্যাচের ২০ মিনিটে পেনাল্টি বক্সে অ্যাঞ্জেলো ডি মারিয়াকে ফাউল করেন ডেম্বেলে। পেনাল্টি দেওয়া হয় আর্জেন্টিনাকে। পেনাল্টি নিতে আসেন লিওনেল মেসি। চলতি বিশ্বকাপে ৬ নম্বর গোলটি করে ফেলেন তিনি। এই ৬টার মধ্যে ৪টে গোল মেসি করলেন পেনাল্টি থেকে। এরপর দ্বিতীয় গোল আসে আর্জেন্তিনার ডি মারিয়ার পা থেকে। ৩৬ মিনিটের মাথায় মাঝ মাঠ থেকে থ্রু বল ধরে দৌড় দেন তিনি। সহজেই পৌঁছে যান ফ্রান্সের ডিফেন্সে। সামনে শুধু হুগো লরিস। কাটাতে কোনও ভুল করেননি তিনি। সঙ্গে সঙ্গে গোল। ২-০ তে এগিয়ে যায় নীল সাদা ব্রিগেড।

প্রথম গোলের ক্ষেত্রে পেনাল্টি পেলেন তিনি। আর দ্বিতীয় গোলটা তিনি নিজে করলেন। ঠিক সেমিফাইনালে মেসির ছবি দেখা গেল এবার ডি মারিয়ার খেলায়। প্রথমার্ধে শেষ হয় ২-০ তে।

মনে হচ্ছিলো বিশ্বকাপ তোলা আর্জেন্টিনার কেবল সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু ফুটবল দেবতা অন্য গল্প লিখে রেখেছিল। দ্বিতীয়াধে আর্জেন্টিনা একাধিক সুযোগ মিস করে। সেই সুযোগ নিয়ে নেয় ফ্রান্স।

দ্বিতীয়ার্ধে ৭৯ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। ওটামেন্ডির ভুলে গোল পায় ফ্রান্স। পেনাল্টি নিতে আসেন কিলিয়ান এমবাপে। গোল করেন। এরপর ৮১ মিনিটের মাথায় ফের গোল এমবাপের। একক দক্ষতায় গোল করলেন তিনি। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। আর ম্যাচের ১০৯ মিনিটের মাথায় দুর্দান্ত গোল করলেন লিওনেল মেসি। এরপর ফের পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। আর সেটা থেকে গোল করেন কিলিয়ান এমবাপে। হ্যাট্রিক করলেন তিনি। ২৩ বছরেও কেন তিনি সেরা তার প্রমাণ দিলেন। এক্সট্রা টাইএক্সট্রা টাইমে পোস্টের বাইরে মারলেন ফ্রান্স দলের চুয়ামেনি। আর কোমানের শট মার্টিনেজ সেভ করেন। প্রথমে নেদারল্যান্ডস তারপর বিশ্বকাপ ফাইনাল মার্টিনেজ না থাকলে মেসি ট্রফি হয়ত ট্রাজিক হিরো হিসেবে থেকে যেতেন। তবে পেনাল্টি মারতে মিস করেননি। মেসি, ডি মারিয়ারা। ট্রফি নিয়েই স্বপ্নপূরণ করলেন। ২০ বছর পর কোনো লাতিন আমেরিকার দল বিশ্বকাপ জিতলো। মেসির শেষটাও মধুর হলো।