এনএফবি,দক্ষিণ দিনাজপুরঃ
কলকাতা থেকে নবজাতক শিশু বিক্রি করতে এসে পুলিশের হাতে ধরা পড়ল দুই দালাল। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল রাত্রে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পতিরাম থানা এলাকার রোলার মোড়ে।ধৃতদের মধ্যে একজন মহিলাও রয়েছে। ধৃতদের নাম সৌরভ শিকদার ও পিংকি মান্না। তাদের বাড়ি কলকাতায়। অপর এক দালাল নবজাতক বাচ্চা নিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে পুলিশ এব্যাপারে কিছু জানায়নি।ঘটনা জানাজানি হতেই যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলায়।
জেলা পুলিশের ডি এস পি ( ডি ই বি) গৌরব ঘোষ আজ এই খবর জানিয়ে বলেন, রবিবার রাতে পুলিশের কাছে গোপন সূত্রে এই শিশু বিক্রির খবরটি আসে। তাতে জানা যায় পতিরামের রোলার মোড়ে শিশুটিকে বিক্রি করা হবে। খবর পেয়ে পতিরাম থানার অফিসার ও পুলিশের একটি দল গিয়ে সেখানে অপেক্ষা করতে শুরু করে। রাত বাড়লে সেখানে এক পুরুষ ও মহিলাকে পুলিশ ঘুরে বেড়াতে দেখলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ৷ তারা দুজনেই অসংলগ্ন কথা বললে পতিরাম থানার পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। সেখানে তাদের জেরা করা হলে তারা ওই নব জাতক শিশু বিক্রির ব্যাপারে সারোগেসির মধ্যমে তারা এই শিশুর বিষয়টির কথা জানায়। এরপর পতিরাম থানার পুলিশ তাদের দুই জন কে গ্রেফতার করে। আজ পুলিশ ওই দুই জনকে বালুরঘাট আদালতে পাঠানোর পাশাপাশি তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে এর পেছনে কোন চক্র কাজ করছে তা জানার জন্য পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে বলে জেলা পুলিশের ডি এস পি ( ডি ই বি) জানান। তিনি আরও জানান এদের বিরুদ্ধে শিশু বিক্রির পাশাপাশি সারোগেসি অ্যাক্টেও মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। কেননা ২০২১ এর সারোগেসির নতুন আইনে কিছু কিছু ধারা বলে দেওয়া হয়েছে কি কি বিষয়ে সারোগেসি ভুক্ত হওয়া যায়। সেখানে এরা পড়েন না বলেই তাদের বিরুদ্ধে সারোগেসি মামলা রজু করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অপরদিকে অন্য সূত্র মারফৎ জানা গেছে নবজাতক শিশুটিকে প্রায় ৮ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করার চেষ্টা হয়েছিল। রবিবার রাত্রে ঘটনাস্থলে এই গ্রেফতার হওয়া দুজন ,কাস্টোমারের কথা মত তারা অপেক্ষা করছিল। আর দূরে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে বাচ্চা নিয়ে অপেক্ষা করছিল সম্ভবত আরেক মূল দালাল। সময় মত কাস্টোমার এসে এই দুইজনের হাতে টাকা দেওয়ার পর সে সিগন্যাল পেলে ডেলিভারি দিয়ে যাবে নবজাতককে, এমনই প্ল্যান ছিল। কিন্তু দালালরা বুঝে উঠতে পারেনি পুলিশ আগেই খবর পেয়ে তাদের জন্য সেখানে অপেক্ষা করে আছে। তাই পুলিশ এই দুই দালালকে ধরতেই, দূরে বাচ্চা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মূল দালাল অন্ধকারে গা ঢাকা দেয় বলে জানা গেছে। যদিও পুলিশ এই দুইজন দালালকে আদালত থেকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে এই ঘটনার আরেক দালালকে ধরার পাশাপাশি মূল চক্রীকে ধরবার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে বলে জানা গেছে। এখন দেখার পুলিশ কত দ্রুত রহস্য ভেদ করতে সক্ষম হয়। সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে জেলাবাসী ৷