এনএফবি, হাওড়াঃ
রাজ্য পরিবহন ব্যবস্থায় নতুন নিয়ম কার্যকর করার কথা জানালেন রাজ্য পরিবহন দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী। মঙ্গলবার হাওড়ার সাঁতরাগাছিতে সরকারি অনুষ্ঠানে এসে এই নতুন নিয়মের বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি। অতীতের মতো দীর্ঘদিন অপেক্ষার পরে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার দিন শেষ হতে চলেছে বলেই মন্ত্রী দাবি করেন।
তিনি জানান, নতুন নিয়মে অনলাইন পদ্ধতির মাধ্যমে যে কেউ লাইসেন্সের আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করার তালিকা অনুযায়ী তাঁকে পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। পরীক্ষা দেওয়ার ৪ ঘন্টার মধ্যে তাঁর হাতে ড্রাইভিং লাইসেন্স তুলে দেওয়া হবে। পাশাপাশি আবেদন করার পরই তাঁর মোবাইলে মেসেজ করে তাঁর আবেদনপত্র জমা হওয়ার বার্তা দেওয়া হবে। লাইসেন্স হাতে না পাওয়া অব্ধি ওই মেসেজ দেখিয়েই সেই ব্যক্তি গাড়ি চালাতে পারবে। এই মর্মে কলকাতা ও রাজ্য পুলিশকেও বিষয়টি নিয়ে অবগত করা হবে বলে জানান পরিবহন মন্ত্রী।
এর পাশাপাশি রাজ্যের সমস্ত আরটিওকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ১৫ বছরের উপরে গাড়িগুলোকে বাতিল করার জন্য। বাতিল হওয়া গাড়িগুলোকে স্ক্যাপ করা হবে। এর জন্য প্রতিটি জেলাতে স্ক্যাপ গ্রাউন্ড তৈরী করা হবে। ওই স্ক্র্যাপ গ্রাউন্ডে বাণিজ্যিক গাড়ি জমা দিলে গাড়ির মালিক বৈধ কাগজ পাবেন। সেক্ষেত্রে তাঁর জন্য নির্দিষ্ট রুট পারমিট দিয়ে সে পুনরায় নতুন গাড়ি কিনতে পারবেন। পাশাপাশি পছন্দের নম্বর নেওয়ার ক্ষেত্রে গাড়ি কেনার আগে থেকে আবেদন করা যাবে। একই বিশেষ নম্বরের জন্য সব আবেদনকারীকে ডেকে তাঁদের মধ্যে থেকে সর্বোচ্চ যিনি দাম দেবেন, ওই নম্বর তাকেই দেওয়া হবে। এছাড়াও সাধারণ নম্বরের ক্ষেত্রে আবেদনকারীরা উপলব্ধ নম্বর থেকে বেছে নিতে পারবেন বলেই জানান পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। এ ছাড়াও আগামীদিনে ই পরিবহণের উপরে সরকার জোর দিয়েছে বলেও জানান তিনি। যদিও রাজ্যের সর্বত্র গজিয়ে ওঠা টোটো তৈরীর কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে মন্ত্রী জানান, যাদের কাছে বৈধ সরকারি অনুমতি আছে তাঁরাই টোটো তৈরী করতে পারবে। তবে টোটো গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো পরিকল্পনা এই মুহূর্তে নেই বলেই জানান তিনি।
ট্রান্সপোর্টে দালাল চক্র সক্রিয় সেই বাম জমানা থেকে। তাই একশো শতাংশ অনলাইন সার্ভিস শুরু করা হলো। যার মাধ্যমে ২৪ ঘন্টা অনলাইন ব্যবস্থার মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স ফার্স্ট কাম ফার্স্ট সার্ভ প্রায়োরিটি হিসাবে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হলো।
এ দিন হাওড়ার সাঁতরাগাছি বাস টার্মিনাসে এসে এমনই ব্যবস্থার সূচনা করলেন রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী।
টোটো পরিবেশবান্ধব হবার কারণে সেন্ট্রাল গভর্নমেন্টের আইন ও কোর্টের রায়ের খুব একটা বাধা নেই। জীবিকার লক্ষ্যে যে কেউ টোটো কিনে যে কোন জায়গায় চালাতে পারে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে হাজার হাজার টোটো রাস্তায় নামানোর ফলে শহরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এর জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে অবৈধ টোটো প্রস্তুতকারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি এলাকার পুরসভা ও পঞ্চায়েত এর মাধ্যমে বৈধ টোটোর তালিকা তৈরি ও রুট বেঁধে দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়ে কোমর বাঁধতে চলেছে রাজ্য পরিবহন বিভাগ।
কে কুন্তল ঘোষ। আগে ও কি রাজনীতি করতো ? হুগলি জেলার যুবনেতা চাকরি দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ কে নিয়ে এমনই প্রশ্ন করলেন হুগলির আরেক জেলা নেতা বিধায়ক ও রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, কোটি কোটি মানুষের জনসমর্থন নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় এসেছে।মানুষের কাছে তৃণমূল কংগ্রেস দলের একটা কমিটমেন্ট আছে। শুধু কুন্তল ঘোষ কেন দলের যে কোন ছোট বড় মাঝারি নেতা যদি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং আদালতে তা প্রমাণিত হয়। তাহলে আইন অনুযায়ী সে শাস্তি পাবে। সেক্ষেত্রে দল এবং দলীয় নেতৃবৃন্দ কোনোভাবেই তার পাশে থাকবে না, স্পষ্ট অবস্থান জানিয়ে দিলেন স্নেহাশীষ চক্রবর্তী।
ডিএ নিয়ে যারা আন্দোলন করছেন, তাদের মনে রাখতে হবে আন্দোলন করার অধিকার তাদের থাকতে পারে। কিন্তু দেখতে হবে বর্তমানে রাজ্যের দেশের বা বিশ্বের অর্থনীতি বিপর্যস্ত। তার ওপর করোনা আবহাওয়া কাটিয়ে উঠতেও যথেষ্ট ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। তাই আর্থিক মন্দার প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে। জিডিপি মাইনাসে নেমে চলে গিয়েছিল। এমন অবস্থা মধ্যে রাজ্য সরকারের কাছে এই মুহূর্তে কোন নোট ছাপানোর মেশিন নেই। পাশাপাশি উন্নয়নের জোয়ারকে অব্যাহত রাখতে প্রচুর টাকা খরচ করা হচ্ছে। এর জন্য ডিয়ে দেওয়া নিয়ে দিলে হচ্ছে, তবে আর্থিক মন্দা কাটলে তা অবশ্যই দেওয়া হবে। মত স্নেহাশীষের।