প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে ভরাডুবি টিম ইন্ডিয়ার

স্পোর্টস ডেস্ক, এনএফবিঃ

টি-২০ বিশ্বকাপ ২০২২-এ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের পরে ভারতীয় সমর্থকরা যে ম্যাচের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল সেই ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ সমর্থকদের জন্য সুখকর হল না। পার্থের বাউন্স-সহায়ক পিচে ব্যাটিং বিপর্যয়ের ফলে পাঁচ উইকেটে হারের সম্মুখীন হতে হল টিম ইন্ডিয়াকে। ভারত শেষ অবধি লড়াই করলেও দুই বল বাকী থাকতেই দক্ষিণ আফ্রিকা লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।

টস জিতে রোহিত শর্মা প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যদিও এই সিদ্ধান্ত ভুল প্রমাণিত হয়। প্রথম ওভারে ওয়েন পার্নেল মেডেন ওভার দেন এবং শুরু থেকেই ওপেনার কেএল রাহুলকে ছন্দহীন মনে হচ্ছিল। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওভারে দুই ওভারে একটি করে ছক্কা হাঁকালেও পঞ্চম ওভারে লুঙ্গি ঙ্গিডি স্পেল শুরু করতেই ভারতের ব্যাটিং বিভাগ ভেঙে পড়ে।পুল মারতে গিয়ে রোহিত ঙ্গিডির হাতেই ক্যাচ দিয়ে বসেন। ১৪ বলে ১৫ রান করে রোহিত ডাগ আউটে ফেরার পরে সেই ওভারেই রাহুল (১৪ বলে ৯) স্লিপে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান।

পাওয়ারপ্লেতে ভারতের শুরু মন্থর হওয়ায় ফর্মে থাকা ব্যাটার বিরাট কোহলি ও সূর্যকুমার যাদব গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন। তবে কোহলি (১১ বলে ১২) ঙ্গিডির একট বাউন্সারে হুক মারার চেষ্টা করলে ফাইন লেগে দাঁড়ানো কাগিসো রাবাডা অনবদ্য ক্যাচ ধরে তাঁকে ক্রিজছাড়া করেন।

এই অবস্থা থেকে একা যোদ্ধা হিসাবে লড়াই করে যান সূর্যকুমার। অন্য প্রান্তে ব্যাটিং করতে আসা দীপক হুডা (০), হার্দিক পান্ডিয়া (২) যখন আউট হলেন ভারতের স্কোর তখন ৪৯/৫। দীনেশ কার্তিকের সঙ্গে সূর্যকুমারের ৫২ রানের কার্যকরী পার্টনারশিপ হলেও ডেথ ওভারে আগ্রাসী শট খেলতে গিয়ে কার্তিকও (১৫ বলে ৬) আউট হন। শেষ অবধি একক লড়াইয়ে সূর্যকুমার (৪০ বলে ৬৮) ভারতকে ১৩৩/৯ স্কোরে পৌঁছতে সাহায্য করেন।

বল হাতে ভারত সমস্যায় ফেললেও দক্ষিণ আফ্রিকার মিডল অর্ডার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার শুরু একেবারেই ভালো হয়নি এবং ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা রাইলি রসৌ ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই আর্শদীপ সিংয়ের শিকার হন। তরুণ পেসার তাঁর প্রথম তিনটি ডেলিভারির মধ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নিয়ে প্রোটিয়া ইনিংসকে জোরালো ধাক্কা দিয়েছিলেন। পুরো পাওয়ারপ্লে জুড়েই ভারতের বোলাররা আধিপত্য বজায় রাখেন।

ষষ্ঠ ওভারে প্রোটিয়া অধিনায়ক তেম্বা বাভুমা মহম্মদ শামিকে ফ্লিক করতে গেলে উইকেটকিপারের হাতে বল জমা দিয়ে বসেন। প্রথম দশ ওভারে আঁটসাঁট বোলিং করে ভারত প্রতিপক্ষকে ৪০ রানে সীমাবদ্ধ রেখেছিল। তবে দশ ওভারের পর থেকেই আগ্রাসী হওয়া শুরু করেন এইডেন মার্করাম। একাদশতম ওভারে হার্দিক পান্ডিয়ার বিরুদ্ধে ১৭ রান ওঠে।

মার্করাম এবং ডেভিড মিলার মিলে ৭৬ রানের জুটি গড়েন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখেন। তবে এই পার্টনারশিপ অনেক আগেই ভাঙার সুযোগ পেয়েছিল ভারত। তবে ক্যাচ মিস এবং রান আউটের উদ্দেশ্যে করা থ্রো স্টাম্পে লাগাতে না পারায় সুযোগ হাতছাড়া করে ভারত। মার্করাম ৪১ বলে ৫২ রান করে আউট হলেও মিলার ক্রিজের অন্য প্রান্তে টিঁকে থাকেন। অষ্টাদশতম ওভারে অশ্বিনের বিরুদ্ধে পরপর দুটি ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন তিনি। শেষ অবধি ৪৬ বলে ৫৯ রানে অপরাজিত থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই পয়েন্ট নিশ্চিত করেন মিলার।

ভারত শেষ অবধি লড়াই করলেও দুই বল বাকী থাকতেই দক্ষিণ আফ্রিকা লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।