অঞ্জন চ্যাটার্জী, এনএফবিঃ
সম্পত্তি গোপন করা এবং কর ফাঁকির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আড়াই বছরের জেলের সাজা হয়েছে বরিস বেকারের। দক্ষিণ পশ্চিম লন্ডনের ওয়ান্ডসওয়ার্থ জেলে থাকতে হবে ছ’বারের গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী জার্মান তারকাকে। জেলে কাজও করতে হবে বেকারকে। জানা গিয়েছে, জিম ট্রেনারের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে তাঁকে। আবার জেলের কয়েদিদের টেনিসের প্রশিক্ষণ দেওয়ার দায়িত্ব পেতে পারেন বেকার।
ওয়ান্ডসওয়ার্থ জেলের এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, জেলের কয়েদিরা নিজেদের ফিট রাখতে জিম ব্যবহার করেন। সেখানে বেকারের মতো কোনও ক্রীড়াবিদকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। আবার কয়েদিদের মধ্যে প্যাডল টেনিস খুব জনপ্রিয়। বেকারের মতো এক জন টেনিস তারকাকে সেই খেলার প্রশিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত করা হতে পারে।ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, বেকারকে জেলের মধ্যে বিশেষ কোনও সুবিধা দেওয়া হবে না। অন্য কয়েদিদের মতোই থাকতে হবে তাঁকে। আপাতত আড়াই বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে বেকারকে। তবে পরবর্তীতে ভাল ব্যবহারের জন্য সাজা কমতে পারে।
সম্পত্তি গোপন এবং আর্থিক প্রতারণার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন প্রাক্তন টেনিস তারকা বরিস বেকার। আড়াই বছর জেল হল বেকারের।চারটি অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সেই মামলার রায় ঘোষণা হল শুক্রবার। জার্মান টেনিস তারকাকে আড়াই বছরের জন্য জেলে থাকতে হবে। শুক্রবার সাউথওয়ার্ক ক্রাউন কোর্টে চার-চারটে অভিযোগ প্রমাণিত হয়ে গেল বেকারের বিরুদ্ধে।২০১৭ সালে নিজেকে যে দেউলিয়া ঘোষণা করেছিলেন বেকার, তা মিথ্যাচার ছাড়া কিছু ছিল না। সেই সময় যথেষ্ট সম্পত্তি ছিল তাঁর কাছে। প্রাক্তন স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায়শই লক্ষ লক্ষ পাউন্ড পাঠাতেন। কিন্তু নিজেকে ঘোষণা করেছিলেন, দেউলিয়া!
২০১৭ সালে স্পেনের শহর মায়োরকায় সম্পত্তি কিনেছিলেন বেকার। ব্যাঙ্ক থেকে তিন মিলিয়ন পাউন্ড ঋণ নিয়ে। সেই ঋণ তো জার্মান টেনিস কিংবদন্তি ফেরত দেননি, উল্টে নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করে দেন। তবে , ২০১৭ সালের পর নিজের প্রাক্তন স্ত্রী বারবারার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অনেক পাউন্ড ট্রান্সফার করতেন বেকার। , প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ পাউন্ড প্রাক্তন স্ত্রী সহ ন’জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ভাগাভাগি করে পাঠিয়েছিলেন বেকার। শুধু তাই নয় বর্তমান স্ত্রী লিলির অ্যাকাউন্টেও টাকা পাঠানো ছাড়াও জার্মানিতে নিজের আরও একটি সম্পত্তির কথা ঘোষণা করেননি বেকার। আট লক্ষ পঁচিশ হাজার ইউরোর ব্যাঙ্ক লোন নেওয়ার কথা লোকান। একইসঙ্গে নিজের মার্সিডিজ বিক্রি করে দিয়েছিলেন, সেটা বলেননি। এক বিলাসবহুল ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে হাজার হাজার পাউন্ড খরচ করতেন। বিখ্যাত ডিজাইনার রাল্ফ লরেনের পোশাক পরে ঘুরে বেড়াতেন।
বেকার জানান যে তিনি সত্যি দেউলিয়া নিজের বিয়ের আংটি পর্যন্ত বিক্রি করতে চেয়েছিলেন। প্রাক্তন স্ত্রীর মোটা অঙ্কের খোরপোষ মেটাতে গিয়ে তাঁর কাছে কিছুই নাকি আর পড়ে নেই। বলতেন, দুই সন্তান আর প্রাক্তন স্ত্রীকে এখনও প্রতিনিয়ত অর্থ পাঠাতে হয়। তবে কোর্টে ধোপে টেকেনি প্রাক্তন টেনিস তারকার বক্তব্য।
বরিস বেকার কনিষ্ঠতম পুরুষ টেনিস প্লেয়ার, হিসেবে উইম্বলডন জেতেন ১৯৮৫ সালে। এর দশ বছর পর উইম্বলডন ফাইনালেই পিট সাম্প্রাসের কাছে হেরে যান বেকার। ছ’টা গ্র্যান্ড স্ল্যামও জেতেন তিনি । টেনিস ছাড়ার পরে কোচিংয়েও আসেন। বর্তমানে বিশ্বের এক নম্বর টেনিস তারকা নোভাক জকোভিচকেও কোচিং করান বরিস বেকার। শ্রী ঘরে যাওয়া তার কেরিয়ারে কালো দাগ লাগিয়ে দিল।