স্পোর্টস ডেস্ক, এনএফবিঃ
ডার্বিতে হারের ক্ষত এখনও টাটকা ইস্টবেঙ্গল শিবিরের কাছে। তারমধ্যেই শুক্রবার চেন্নাইয়ান এফসির বিরুদ্ধে আইএসএলের লড়াইয়ে নামবে লাল হলুদ ব্রিগেড। কয়েকদিন আগেই এই যুবভারতীতেই এটিকে মোহনবাগানকে হারিয়ে তিন পয়েন্ট নিয়ে গিয়েছে চেন্নাই। এবার চেন্নাই ম্যাচে নামার আগে ইস্টবেঙ্গল কোচ স্টিফেন কনস্টান্টাইন বেশ সতর্ক। তবে তিনি জানাচ্ছেন ঘরের মাঠে এর আগে এফসি গোয়ার কাছে শেষ মুহূর্তের গোলে হেরেছেন। কোচের বক্তব্য, তাঁর দল যথেষ্ট ভাল খেলছে। কিন্তু যখন গোল দরকার, তখন সেই গোলটাই করতে পারছে না। তবে তিনি যে দুশ্চিন্তায় পড়েননি, এটুকু বুঝিয়ে দিলেন এ দিন।
বললেন, দল ক্রমশ প্রতি ম্যাচে উন্নতি করছে, আরও করবে। এই ম্যাচে তাই তাঁর তিন পয়েন্টের আশা অনেক।
চেন্নাইকে নিয়ে তিনি বলেন, কলকাতায় এসে যারা এটিকে মোহনবাগানকে হারিয়ে গিয়েছে, তাদের সমীহ করতেই হবে। ওদের যথেষ্ট ভাল ভাল খেলোয়াড় আছে। আগেও বলেছি, প্রত্যেক প্রতিপক্ষকেই আমরা শ্রদ্ধা করি। আমরা ঘরের মাঠে তিন পয়েন্টের জন্যই খেলব।
ওদের দলে নারায়ণ দাস, অনিরুদ্ধ থাপার মতো কয়েকজন ভারতীয় খেলোয়াড় আছে, যাদের নিয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ভাল লাগছে, ওরা যথেষ্ট গুরুত্ব পাচ্ছে। তবে আমাদের এই ম্যাচে জিততেই হবে।’
এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে আমরাই ভাল খেলেছিলাম। আমরা ওদের চেয়ে বেশি সুযোগ তৈরি করেছি। বল দখলেও সম্ভবত আমরা এগিয়েছিলাম। কিন্তু সুযোগগুলো গোলে পরিণত না করতে পারলে তার মাশুল দিতেই হবে। এটিকে মোহনবাগান একটা সুযোগ পেয়েই তা থেকে হুগো গোল করে। এটাই ফুটবল। ওরা আর একটা সুযোগ পেয়ে তা থেকে ২-০ করে। আমরা গোল খাওয়ার পর বলি, নিজেদের ভুলে গোল খেয়েছি। ফুটবল মানে তো তা-ই। ভুল করলে তার শাস্তি পেতেই হবে। তবে আমি উদ্বিগ্ন নই। আগের ম্যাচে আমরা খুবই ভাল খেলেছিলাম ও ম্যাচটা জিতেছিলাম। কেরালা ও গোয়ার বিরুদ্ধেও ভাল খেলেছি। আমাদের দলটা নতুন। দাঁড় করাতে সময় লাগবে। প্রতি ম্যাচে আমরা উন্নতি করছি। আরও উন্নতি করতে হবে। দুই অর্ধেই সমান ভাল খেলতে হবে। দেখা যাক এই ম্যাচে সেটা পারি কি না।”
চেন্নাই দলে একাধিক বাঙালি ফুটবলার। স্টিফেন জানাচ্ছেন, “গ্যালারিতে আমাদের সমর্থকেরা অনেক বেশি গলা ফাটায়। আমাদের সমর্থকেরা যথেষ্ট সমর্থন দিচ্ছেন আমাদের। আশা করি ভবিষ্যতেও দেবেন। ওদের দলে একাধিক বাংলার খেলোয়াড় থাকলেও আমাদের কোনও সমস্যা হবে না।”
দলের কৌশল নিয়ে ব্রিটিশ কোচ জানালেন, “অনুশীলনে আমরা আক্রমণ ও রক্ষণের সেট পিসের প্রস্তুতি নিই। অবশ্যই এটা চিন্তার বিষয়। আমাদের এই সুযোগ থেকে আরও গোল করতে হবে। প্রতিপক্ষ রক্ষণে বক্সের মধ্যে অনেক লোক বাড়িয়ে রাখে। যার ফলে কাজটা আরও কঠিন হয়ে যায়। তবে আমাদের আরও সৃষ্টিশীল হতে হবে। রাস্তা তৈরি করতে হবে।”
“আমি কখনওই আশা করিনি দল টানা ৮-৯টা ম্যাচে জিতবে। এর জন্য সময় লাগবে। সবে ৩-৪টে ম্যাচ হয়েছে। সব কিছু নিখুঁত হতে কত ম্যাচ লাগবে জানি না। হয়তো ২০টা ম্যাচ লাগবে। প্রতি ম্যাচেই উন্নতি করছি। অনেক সুযোগ তৈরি করছি। লিগের অন্যতম সেরা দলের বিরুদ্ধে আমরা প্রথম ৪৫ মিনিট দুর্দান্ত খেলেছি। কিন্তু মুহূর্তের মনঃসংযোগ নষ্টের কারণে সাফল্য পাইনি। কিন্তু এটাই ফুটবল। গত মরশুমে বা তার আগের মরশুমে আমরা কোথায় ছিলাম, মনে করে দেখুন। ভাল দল কখনও এক দিনে তৈরি হয় না। ম্যাঞ্চেস্টার সিটিও একসময়ে তৃতীয় ডিভশনে খেলত।”
স্টিফেনের সঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে আসেন দলের মিডফিল্ডার জর্ডন ও’ডোহার্টিও। তিনি বললেন,
“আমরা একটা দল হিসেবে কাজ করছি, যাতে শেপ বজায় রাখা যায়। রক্ষণ ও আক্রমণে আরও ধারাবাহিকতা আনার চেষ্টা করছি। মাঝমাঠে হ্যারির (কিরিয়াকু) সঙ্গে খেলা উপভোগ করছি। দু’জনের মধ্যে একটা ভাল বোঝাপড়া তৈরি হয়েছে আমাদের। সবাই এই চেষ্টা করছে। সে জন্য প্রতি ম্যাচে আমরা উন্নতিও করছি। সব কিছু ঠিক করার জন্য এখনও অনেক পরিশ্রম করতে হবে।”