রাজ্যলেটেস্ট

ইউক্রেনে আটকে বাংলার বহু পড়ুয়া, উদ্বিগ্ন পরিবার

এনএফবি, নিউজডেস্কঃ

গত চব্বিশ ঘন্টায় বদলে গেছে ইউক্রেনের রোজনামচা ৷যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক জনজীবন পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ৷ আর তাতে এখন সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলা থেকে ইউক্রেনে পাড়ি দেওয়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিক্যাল পড়তে যাওয়া এক ঝাঁক পড়ুয়া ৷ ভৌগোলিক দূরত্বে পশ্চিম বঙ্গের বিভিন্ন জায়গার বাসিন্দা হলেও প্রত্যেক পড়ুয়ার পরিবারই চরম উৎকন্ঠায় দিন যাপন করছে ৷ তারা সকলেই চাইছে নিরাপদে যেন সকল পড়ুয়া দেশে ফিরে আসতে পারে ৷

আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট বীরপাড়া ব্লকের রেজাউল ইসলামের ছেলে তানবির ইসলাম এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া আটকে রয়েছে ইউক্রেনের চার্নিভিৎসি এলাকায় ৷চরম উৎকন্ঠায় রয়েছে পরিবার ৷ পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থানার তেরোপেখ্যা গ্রামের বাসিন্দা বিকাশ চন্দ্র বর্মণ চরম দুশ্চিন্তায় দিন যাপন করছে ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়তে যাওয়া ছেলে দেবজিৎ বর্মণের জন্য৷ বিকাশ বাবু বলেন,ভারত সরকারের কাছে একটাই আবেদন, যেভাবেই হোক যেন আটকে থাকা পড়ুয়াদের ভারতে ফিরে আসার ব্যবস্থা করেন ৷

পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদার মেয়ে অনিন্দিতা মাইতি ৷ কিয়েভ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির ছাত্রী অনিন্দিতা ৷ অনিন্দিতা বাবাকে ফোনে জানান,যখনই সাইরেন বাজছে তখনই আন্ডার গ্রাউন্ডে চলে যেতে হচ্ছে ৷ ফোনে কথা বলার ও পরিস্থিতি নেই এখন ৷ খাওয়া দাওয়াও প্রায় বন্ধ ৷ আর তা শুনে বাবা অদ্বৈত মাইতি কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ৷ কিয়েভ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির তৃতীয় বর্ষের আর এক ছাত্র সুশোভন বেরা ৷ বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবংয়ে ৷মোবাইলে হোয়াটস অ্যাপ কলে যোগাযোগ করে সুশোভন জানায় সে বর্তমানে একটি বিল্ডিংয়ের আন্ডার গ্রাউন্ডে রয়েছে ৷মোবাইলের চার্জ ও প্রায় শেষ হতে চলেছে ৷ এরপর হয়ত বাড়ির সাথে যোগাযোগ রাখাও আর সম্ভব হবেনা ৷ আর তা শুনে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় প্রহর গুনছে পরিবার ৷

ইউক্রেনে আটকে রয়েছে সাগরদিঘীর বাসিন্দা মহম্মদ এনায়েতুল্লাহ ৷ মেডিক্যাল পঞ্চম বর্ষের ছাত্র এনায়েত আটকে আছে ইউক্রেনের লুগান্স্ক এলাকায় ৷প্রায় ২২ জন বাঙালী সহ ২৬ জন পড়ুয়া আটকে রয়েছে ঐ একই এলাকায় ৷ কিয়েভ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির তৃতীয় বর্ষের আর এক মেধাবী পড়ুয়া জঙ্গিপুর জয়রামপুর মন্ডল পাড়ার মোজাম্মেল হক আনসারি ২০১৮ সালে এমবিবিএস পড়তে ইউক্রেনে যান ৷ গত বছর জানুয়ারি মাসে বাড়িতে এসেছিল ,এতোদিন অনলাইনে ক্লাস হতো ৷ গত বছর ডিসেম্বরেই আবার ইউক্রেনে ফিরে যান ৷ আজ সকাল ৬টায় দাদা মইনুল ইসলামকে হোয়াটস অ্যাপ কল করে জানায় শহরে সাইরেন বেজেছে ৷ যেকোন মুহুর্তে হামলা হতে পারে ৷আমরা বেসমেন্টে চলে যাচ্ছি আর হয়ত যোগাযোগ করা সম্ভব হবেনা ৷আর তা শুনে বাড়ির লোকের উদ্বেগ আর ও বৃদ্ধি পেয়েছে ৷ ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে পরিবারের লোকজন চাইছে যত দ্রুত সম্ভব ভারত সরকার নিরাপদে যেন তাদের ছেলেকে ঘরে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করে ৷