এনএফবি, কলকাতাঃ
কলকাতায় পৌঁছালেন দু’বারের বিশ্ব চাম্পিয়ান হার্ডলার কলিন জ্যাকসন। আগামী রবিবার রেড রোডে অনুষ্ঠিত হতে চলছে টাটা স্টিল কলকাতা ২৫কে ম্যারাথন। সেই ক্রীড়া কর্মসূচির আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক দূত হিসাবে প্রথমবার কলকাতায় পা রাখলেন অলিম্পিকের রুপো জয়ী এই ক্রীড়াবিদ।
বৃহস্পতিবার কলকাতা ম্যারাথনের অস্থায়ী মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে খোলামেলা আলোচনায় নিজের মতামত জানালেন এই আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব। এরপূর্বে ২০১৮ সালে পেশাগত কারণে ভারতে এসেছেন কলিন। তবে তখন তিনি দিল্লি থেকেই ফিরে গিয়েছেন। কলকাতায় পা দিয়েই মাছ মাংসের স্বাদ নিয়েছেন। মিষ্টি চেখে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। বৃহস্পতিবার কলকাতা এসেই ফটোশ্যুটে যান ভিক্টোরিয়ায়। ভিক্টোরিয়া দেখে মুগ্ধ কলিন। একইসঙ্গে মুক্ত কন্ঠে জানালেন তিলোত্তমায় মুগ্ধ তিনি। জানালেন, “শহরটা দারুণ লাগছে। ভরপুর এনার্জি। নিউইয়র্ক যেমন কখনও ঘুমায় না, ভারতও তেমনিই। ভিক্টোরিয়ার আশেপাশে রাস্তাঘাট ব্যস্ততম।“
কলিন জ্যাকসন ১৯৮৮ সালে সিওল অলিম্পিক্সে রুপো জেতেন। কমনওয়েলথ গেমসে দু’বারের সোনা জয়ী এই ক্রীড়াবিদ ১৯৯৩ এবং ১৯৯৯ সালে জয়লাভ করেন বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে। খেলার জগতে মোট ২৫টি আন্তর্জাতিক পদকজয়ী ওয়েলসের নাগরিক জ্যাকসন। টোকিও অলিম্পিকে সোনা জয়ী জ্যাভলিন থ্রোয়ার ভারতীয় অ্যাথলিট নীরজ চোপড়ার ফের জয়ের বিষয়ে আশাবাদী কলিন। একইসঙ্গে তিনি জানান, “ নীরজের ওপর প্রত্যাশার চাপ থাকবে। সেটা ও নিজেও অনুভব করবে। তবে বর্তমানে মনঃসংযোগ বৃদ্ধির একাধিক উপায় আছে। অলিম্পিকের চাপ নিলে হবে না। সব সময় সেটা মাথায় রাখা চলবে না। চাপমুক্ত হয়ে নামতে হবে। নিজর ওপর আস্থা রাখতে হবে। এটাই হবে ওর সাফল্যের চাবিকাঠি।“ সেইসঙ্গে নিরজের খেলার তারিফ করে বলেন, “ ওর ফোকাস এবং কমিটমেন্ট অন্য পর্যায়ের। জ্যাভলিন ছোঁড়ার সময়ে বর্ষা সঠিক জায়গায় রাখার চেষ্টা করে। রিলিজটা দেখার মতো।“
বিশ্বমঞ্চে ভারতীয় ক্রীড়াবিদদের ‘ঘুমন্ত দৈত্য’ বলে অভিহিত করেন কলিন। একইসঙ্গে তিনি জানান, তবে সেই ঘুমন্ত ধীরে ধীরে জেগে উঠছে। এশিয়ান গেমসে ভারতের সাফল্যের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে জ্যাকসন বলেন, নিজেদের স্বাচ্ছন্দ্যের জায়গা থেকে বেরিয়ে এসে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে ভারতীয় খেলোয়াড়দের। তিনি জানান, শুধুমাত্র নিজের উপর আস্থা রাখতে চান। ভারতে যেমন ক্রিকেট জনপ্রিয় তেমনি ওয়েলসে রাগবি। একসময় ক্রিকেট ফুটবল বাস্কেটবল খেললেও ব্যক্তিগত ইভেন্টই তাঁর পচ্ছন্দের। দলগত খেলায় তিনি নিরুৎসাহিত।
ভারতীয় খেলোয়াড়দের সাফল্যের মন্ত্র দিলেন তারকা হার্ডলার। জানালেন, “ আমি একটা মাইন্ডসেট নিয়ে নামতাম। চ্যাম্পিয়ান হিসাবে গর্ববোধ করতাম। প্রতিবার নতুন লক্ষ্য সেট করতাম। প্রতিটি রেসকেই ফাইনাল হিসাবে ধরতাম। এখনকার অ্যাথলিটরা মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। একও মিনিটের জন্যও মনোঃসংযোগ হারানো যাবে না। তাহলেই জায়গা দখল হয়ে যাবে। সেই মরিয়া চেষ্টা থাকতে হবে। ভারতীয় অ্যাথলিটরা ভালোই করছে। ভয় পেলে চলবে না। মন থেকে ভয় পুরোপুরি মুছে ফেলতে হবে। অলিম্পিকে নামছি ভাবলে হবে না। সেটা ভুলে যেতে হবে। ইতিবাচক মনোভাব রাখতে হবে।“ রবিবারের কলকাতা ম্যারাথনে সাক্ষ্মী থাকতে পেরে উত্তেজিত অলিম্পিকে রুপোজয়ী এই ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব।