রাজ্য

পুর নির্বাচন অবাধ করতে কর্মীদের কড়া বার্তা অভিষেকের

এনএফবি ব্যুরো, নিউজ ডেস্কঃ

পুর ভোটকে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে কড়া বার্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শনিবার কলকাতা পুর ভোটের প্রার্থী এবং নেতাদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার স্ট্র‍্যাটেজি বৈঠকে এই বার্তা দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।

দলের কেউ জোর করে কাউকে ভোট দানে বাধা দিলে বহিষ্কারের হুঁশিয়ারিও দেন অভিষেক। আজকের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের শীর্ষনেতাদের অনেকেই। কলকাতা পুরসভার ১৪৪ জন প্রার্থী ছাড়াও যাঁরা এবার টিকিট পাননি তাঁদের অনেকেই এই সভায় উপস্থিত ছিলেন।

পুরভোটে দলের নেতা কর্মীদের গা-জোয়ারি মনোভাব কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবে না তা এদিন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন অভিষেক।

সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের এই কথার প্রতিধ্বনি শোনা যায় দলের নেতা ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্যে। বৈঠক শেষে এদিন ফিরহাদ সাংবাদিকদের জানান, “ভোটদানে বাধা দিলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একইসাথে তিনি বলেন, “তৃণমূলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। যাঁরা টিকিট পাননি তাঁরাও দলের সৈনিক। পুরভোটে যাঁরা টিকিট পাননি তাঁদের অন্য কাজে লাগানো হবে।” পাশাপাশি টিকিট না পাওয়া বিক্ষুব্ধদের বার্তা দিয়ে এদিন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র বলেন,” মনে রাখতে হবে সবার উপরে দল। টিকিট না পেয়ে যাঁরা লড়ছেন তাঁরা অন্যায় করছেন।”

পুর ভোটের মুখে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে স্থানীয় নেতা কর্মীদের এই বার্তার কারন ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে খারাপ অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে বলেই সংশ্লিষ্ট মহলের অভিমত। সেইবার রাজ্যের পঞ্চায়েতের ৩৪ শতাংশ আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতে তৃণমূল। তা নিয়ে বিস্তর বিড়ম্বনায় পড়ে দল। বিরোধী দলের প্রার্থীদের ভীতি প্রদর্শন থেকে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে না দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। বিতর্কের জল গড়িয়েছিল সুপ্রিমকোর্ট পর্যন্ত।

কিন্তু এইবারের নির্বাচন ধারে ভারে অন্য নির্বাচনের থেকে চরিত্রগত ভাবেই আলাদা। এমনিতেই বিধানসভা নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিরোধী দলগুলি। রাজ্যে তৃণমূলের তুলনায় তাদের জনসমর্থন যে তলানিতে তা পরীক্ষিত সত্য। অপরদিকে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে তৃণমূলের গ্রহণযোগ্যতা যেভাবে বাড়ছে লোকসভার মুখে তা যাতে ধাক্কা না খায় সে বিষয়ে সচেতন নেতারা। অপরদিকে এই নির্বাচন পরিচালনার গুরুদায়িত্ব রাজ্য প্রশাসনের উপর যে প্রশাসনের পরিচালক তৃণমূল সরকার। ফলে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রশাসনিক স্বচ্ছতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করাও তৃণমূলের কাছে চ্যালেঞ্জ। কারন বিরোধী বিজেপি এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জাতীয় রাজনীতিতে যাতে ফায়দা তুলতে না পারে তাই সাবধানী জোড়াফুল শিবির। স্থানীয় নেতাদের কাছে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের এই বার্তা জাতীয় রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত।

শীর্ষ নেতৃত্বের এই কড়া বার্তা এখন কতটা কার্যকর হয় সেই দিকেই তাকিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল।