ক্রীড়া

[:en]হার দিয়ে সুপার কাপ শেষ বাগানের[:]

[:en]

অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, এনএফবিঃ

হার দিয়ে সুপার কাপ অভিযান শেষ করল এটিকে মোহনবাগান। মঙ্গলবার গ্রুপ লিগের শেষ ম্যাচে তাদের ১-০-য় হারায় এফসি গোয়া। ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে ডিফেন্ডার ফারেস আর্নওতের গোলে ম্যাচ জিতে নেয় এফসি গোয়া। আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন হলেও সুপার কাপ মোটেই ভাল গেল না সবুজ-মেরুন বাহিনীর। গত ম্যাচে জামশেদপুরের কাছে তিন গোলে হারের পর এ বার এফসি গোয়ার কাছেও হারল তারা।

এ দিন কোঝিকোড়ের ইএমএস কর্পোরেশন স্টেডিয়ামে কোনও দলই খুব একটা আকর্ষণীয় ও উজ্জীবিত ফুটবল খেলতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধে যাও আক্রমণের ঝাঁঝ ছিল, প্রথমার্ধে একেবারেই তা পাওয়া যায়নি। সারা ম্যাচে গোলশূন্য থাকার পরে ৮৯ মিনিটের মাথায় গোলকিপার বিশাল কয়েথের একটি ছোট্ট ভুলের খেসারত দিতে হয় এটিকে মোহনবাগানকে। এই হারের ফলে তিন ম্যাচে মাত্র তিন পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের তিন নম্বর দল হিসেবে শেষ করল তারা। ছ’পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে রইল এফসি গোয়া।

আগামী ৩ মে এটিকে মোহনবাগানকে এএফসি কাপের বাছাই পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জনের জন্য প্লে-অফে মুখোমুখি হতে হবে হায়দরাবাদ এফসি-র। এই হারের পর ওই ম্যাচের জন্য আত্মবিশ্বাস ফিরে পান কি না সবুজ-মেরুন ফুটবলাররা, সেটাই দেখার।

গ্রুপ থেকে জামশেদপুর এফসি আগেই সেমিফাইনালে উঠে যাওয়ায় এটি ছিল গুরুত্বহীন ম্যাচ। তাই প্রথম এগারোয় চার-চারটি পরিবর্তন করে দল নামান এটিকে মোহনবাগান কোচ হুয়ান ফেরান্দো। গত ম্যাচের প্রথম এগারো থেকে বাদ পড়েন আশিস রাই, হুগো বুমৌস ও মনবীর সিং। প্রীতম কোটাল ব্যক্তিগত কারণে অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁদের জায়গায় ফেদরিকো গায়েগো, আশিক কুরুনিয়ান, লালরিনলিয়ানা হ্নামতে ও কিয়ান নাসিরিকে প্রথম দলে রাখা হয়।

প্রথমার্ধে কোনও দলই খুব একটা আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেনি। মূলত মাঝমাঠ নির্ভর ফুটবল খেলে দু’পক্ষই। যেটুকু আক্রমণ হয়, তার বেশিরভাগটাই আসে এটিকে মোহনবাগানের পক্ষ থেকে। প্রথম ৪৫ মিনিটে মোট পাঁচটি শটের মধ্যে তিনটি গোলে রাখে কলকাতার দল। এফসি গোয়া সেখানে ছ’টি শট নিলেও তার একটিও গোলে ছিল না। বল দখলের লড়াইয়ে অবশ্য কার্লোস পেনার দলই এগিয়ে (৫৬-৪৪) ছিল। মোটের ওপর খুব একটা গতিময় ফুটবল খেলেনি কোনও দলই।

শুরুতেই চার মিনিটের মাথায় নোয়া সাদাউই বাঁ দিকের উইং থেকে একটি মাপা ক্রস ভাসিয়েছিলেন বক্সের মধ্যে। উদ্দেশ্য ছিল ব্রাইসন ফার্নান্ডেজ। কিন্তু তিনি ঠিকমতো বলে পৌঁছতেই পারেননি। ১৬ মিনিটের মাথায় ডান দিক থেকে আশিক কুরুনিয়ানের গোলমুখী শট বাঁচান গোয়ার গোলকিপার অর্শদীপ সিং। এটিকে মোহনবাগানের হাইালাইন ফুটবলের সুযোগ নিয়ে ২০ মিনিটের মাথায় ইকের গুয়ারৎজেনা সবুজ-মেরুন গোলের সামনে চলে যান এবং শটও নেন, যা বিশাল কয়েথের রুখতে কোনও অসুবিধাই হয়নি।

এ দিন এটিকে মোহনবাগানের আক্রমণ বিভাগে দায়িত্বে ছিলেন আশিক, কিয়ান নাসিরি, দিমিত্রিয়স পেট্রাটস ও লিস্টন কোলাসো। কিন্তু প্রথমার্ধে কাউকেই খুব একটা তৎপর মনে হয়নি। তিরি শুরু থেকে না খেললেও রক্ষণকে বেশ সঙ্ঘবদ্ধ লেগেছে।

৩৯ মিনিটের মাথায় ডানদিক দিয়ে ওঠা কোলাসো বক্সে ঢুকে কাউকে বল না দিয়ে নিজেই কোণাকুনি শট নেন, যা আটকে যায় গোলকিপারের হাতে। ৪৪ মিনিটের মাথায় বক্সের মধ্যে বল পেয়ে যান পেট্রাটস। কিন্তু তাঁর শট ব্লক করে দেন আইবানভা ডোলিং।

দ্বিতীয়ার্ধে খেলার গতি কিছুটা বাড়লেও দুই দলের ফুটবলাররাই অসংখ্য ভুল পাস দিয়ে যান সমানে। শুরুতেই হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের জন্য স্ট্রেচারে করে বের করে নিয়ে আসা হয় লিয়েন্ডার ডি’কুনহাকে। তাঁর জায়গায় নামেন সেভিয়ার গামা। এই অর্ধের শুরুতেই দামিয়ানোভিচের জায়গায় তিরিকে নামায় এটিকে মোহনবাগান। ৭০ মিনিটের মাথায় একসঙ্গে তিনটি পরিবর্তন করেন ফেরান্দো। মনবীর, বুমৌস ও পুইতিয়া নামেন কোলাসো, গায়েগো ও কিয়ানের জায়গায়। উদ্দেশ্য আক্রমণের তীব্রতা বাড়ানো।

নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার দশ মিনিট আগে গ্ল্যান মার্টিন্সের বদলে নামানো হয় সুমিত রাঠিকেও। তাতে অবশ্য আক্রমণের গতি বা ধার কোনওটাই বাড়েনি। বরং ৮৯ মিনিটের মাথায় ম্যাচের একমাত্র গোল করে দলের জয়ের রাস্তা সুনিশ্চিত করে ফেলেন সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার ফারেস আর্নওত। তবে এই গোলে বিশাল কয়েথেরও অবদান ছিল যথেষ্ট।

নোয়ার কর্নার কিক সোজা বিশালের হাতে গিয়ে পৌঁছয়। কিন্তু অদ্ভূত ভাবে তাঁর হাত থেকে বল ফস্কে যায় এবং সেই বল হেড করে জালে জড়িয়ে দেন ফারেস (১-০)। পাঁচ মিনিটের বাড়তি সময়ে মনবীর ডানদিক দিয়ে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে সোজা গোলকিপারের হাতে বল তুলে দেন। এর পরে আর সমতা আনার সময় ছিল না। সারা ম্যাচে একটি শট গোলে রাখে এফসি গোয়া এবং একটিই গোল। অন্যদিকে এটিকে মোহনবাগান চারটি শট গোলে রেখেও একটিও গোলে পরিণত করতে পারেনি।

[:]